ফোনালাপে উসকানির মামলায় বিএনপির খসরুর বিচার শুরু
ফোনালাপের মাধ্যমে উসকানি দেওয়ার অভিযোগের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। প্রায় পাঁচ বছর আগে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে তিনি উসকানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার শুরু হলো।
আজ সোমবার দ্বিতীয় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আমীরুল ইসলাম শুনানি শেষে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এই মামলায় আরেক আসামি হলেন মিলহানুর রহমান।
সরকারি কৌঁসুলি মোহাম্মদুন্নবী শিমুল প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেন আদালত।
আসামিদের আইনজীবী আবদুস সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের নির্দোষ দাবি করে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৪ আগস্ট তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছিলেন। ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রে নৈরাজ্য সৃষ্টির উদ্দেশ্যে তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। মামলা করার সপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। এটি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই ক্লিপে কুমিল্লা থেকে মিলহানুর রহমান নামের এক কর্মীর সঙ্গে একজনকে কথা বলতে শোনা যায়। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে লোকজনকে নামানোর নির্দেশ দেওয়ার কথা বলতে শোনা যায় সেই ব্যক্তিকে।
তদন্ত শেষে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে বলা হয়, প্রত্যক্ষভাবে রাষ্ট্রযন্ত্র অচল, সরকারবিরোধী কার্যকলাপ, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এ জন্য আমীর খসরু ও মিলহানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হলো।
আর তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে একই অভিযোগে করা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তথ্যগত ভুল উল্লেখ করে তাঁদের অব্যাহতির সুপারিশ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হন। এ ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।