অনলাইন জুয়ার বিস্তারে টিআইবির উদ্বেগ
দেশে অনলাইন জুয়ার বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তরুণসমাজকে এর কবল থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে অনলাইনে জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি বলেছে, সর্বোচ্চ আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।
দেশের প্রচলিত আইনে যেকোনো ধরনের জুয়া নিষিদ্ধ হলেও নানা কৌশলে অনলাইন জুয়ার প্রচার ও প্রসার চলছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও মূলধারার সম্প্রচারমাধ্যমে, বিশেষ করে খেলাধুলার চ্যানেলসহ ডিজিটাল ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বাজি ও জুয়ার বিজ্ঞাপনের রমরমা প্রচার চলছে। এমনকি এ বছরের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) একটি দলের জার্সিতে জুয়ার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনও দেখা যায়। ইদানীং শহরের বিভিন্ন বিলবোর্ডেও অনলাইন জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতে দেখা যাচ্ছে।
এমন বিজ্ঞাপন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘চরম উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, দেশে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপনের মহোৎসব চলছে। আইনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে শুধু মুনাফার লোভে দেশকে চরম বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া কোনোমতেই দায়িত্বশীল গণমাধ্যমের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে না।’
অনলাইন জুয়ার কারণে নানা ধরনের সামাজিক সংকট তৈরি হচ্ছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে সর্বস্ব খুইয়ে আত্মহত্যার ঘটনা নিয়মিত বিরতিতে সংবাদে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া পারিবারিক অশান্তি, কলহ, বিষণ্নতার পাশাপাশি অবৈধ উপায়ে বিপুল বিত্তবৈভব অর্জনের ঘটনাও ঘটছে।
টিআইবি মনে করে, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ই-ব্যাংকিং, ক্রেডিট কার্ড, ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ বিভিন্ন মাধ্যমে পাচার হয়। অথচ চোখের সামনে হয়ে যাওয়া এই পাচার রোধে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) কোনো দায়িত্বশীল সংস্থার উদ্যোগের কথা জানা যায় না।
সংবিধানের ১৮ (২) অনুচ্ছেদ ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী, যেকোনো ধরনের জুয়া প্রতিরোধ করতে সরকারের ওপর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে দেশে এখনো জুয়া প্রতিরোধে ব্যবহার হচ্ছে ১৫৭ বছরের পুরোনো আইন। সরকার জুয়া প্রতিরোধ আইন, ২০২৩ প্রণয়নের উদ্যোগ নিলেও এখনো তা খসড়া পর্যায়েই রয়ে গেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে জুয়া প্রতিরোধে কঠোর ও যুগোপযোগী আইন আরও আগেই প্রণীত ও প্রয়োগ হওয়া প্রয়োজন ছিল বলেও মনে করে টিআইবি।