প্রশাসনিক ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছেন

নারীর ওপর পুলিশি নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা’র প্রতিবাদে মানববন্ধনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনেছবি: সংগৃহীত

সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি বলেছে, রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। তারা বলছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে সাম্প্রদায়িক চিন্তা, চেতনা ও মনোভাব। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

সাম্প্রতিক সময়ে ‘নারীর ওপর পুলিশি নির্যাতন এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা’র প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, বংশালে হরিজন সম্প্রদায়কে উচ্ছেদের ঘটনা নতুন নয়। বিভিন্ন সময় তাঁদের উচ্ছেদের ঘটনা, পুলিশি হেফাজতে নারীর মৃত্যু এবং ধর্মীয় অবমাননার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে দেশে আইন কেউ মানছে না; বরং নিজেদের মতো আইনকে ব্যবহার করছে।

মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ‘প্রশাসনের ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের মাধ্যমে আজ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। দেখছি, প্রতিটি ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে সাম্প্রদায়িক চিন্তা, চেতনা ও মনোভাব।’ হরিজন সম্প্রদায়ের পুনর্বাসনের চিন্তা না করেই ব্যবসায়িক বিনিয়োগের বিস্তারের লক্ষ্যে তাঁদের উচ্ছেদ করা কোনোভাবেই কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠনের মধ্যে নাগরিক উদ্যোগ, নারী প্রগতি সংঘ, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট, ঢাকা ওয়াইডব্লিউ সিএ, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও ব্লাস্টের প্রতিনিধিরা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।

হরিজনদের উচ্ছেদচেষ্টার ঘটনায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা ঘটনার বিবরণ দেন মহিলা পরিষদের আইনজীবী সিনোমে মারমা। আধুনিক কাঁচাবাজার নির্মাণের জন্য গত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পুরান ঢাকার আগাসাদেক সড়কের পাশের মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে থাকা হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করতে শতাধিক পুলিশ ও উচ্ছেদ পরিচালনার জন্য যানযন্ত্র (এক্সকাভেটর ও পেলোডার) নিয়ে যান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা। কিন্তু হরিজন সম্প্রদায়ের বাসিন্দা ও তাঁদের স্কুলপড়ুয়া সন্তানদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে সেদিন রাত নয়টা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চালাতে পারেননি তাঁরা। আজ এই উচ্ছেদপ্রক্রিয়ার ওপর ৩০ দিনের স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।