সৌদি যুবরাজের ঢাকা সফর নিয়েও আলোচনা হবে

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানছবি: রয়টার্স

রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের ধারাবাহিকতায় ব্যবসা ও বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমন্বিত অংশীদারত্বে জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব। আগামী ১ জুলাই রিয়াদে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় রাজনৈতিক সংলাপে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এ সময় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ও আলোচনা হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী সোমবার রিয়াদে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে বসবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ২০২২ সালের মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম সংলাপের ধারাবাহিকতায় রিয়াদে এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই সংলাপে যোগ দিতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ  রহমান।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের মধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক পর্যালোচনাসহ সৌদি যুবরাজের প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফর, জনশক্তি রপ্তানি, বেসরকারি খাতে ব্যবসা বাড়ানো, সৌদি উন্নয়ন তহবিলের (এসএফডি) মাধ্যমে বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা, যৌথ বিনিয়োগে বাংলাদেশ ইউরিয়া ও ডিএপি সার কারখানা স্থাপন, বাংলাদেশের পেট্রো-কেমিক্যাল ও পর্যটনে সৌদি বিনিয়োগের উদ্যোগ ও প্রস্তাবিত বিনিয়োগের প্রসঙ্গগুলো নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিরক্ষার পাশাপাশি তথ্য যোগাযোগপ্রযুক্তি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোও আলোচনায় আসবে। পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, ইয়েমেন পরিস্থিতি, পবিত্র মক্কা-মদিনাকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হুতিদের হামলা, রোহিঙ্গা সংকট, ইউক্রেন যুদ্ধের বৈশ্বিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা হবে।

আসন্ন রাজনৈতিক সংলাপে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব নজরুল ইসলাম আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। তবে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পাশাপাশি তা পরের ধাপে উত্তরণের বিষয়ে আলোচনায় মূল গুরুত্ব থাকবে।

রিয়াদের একটি কূটনৈতিক সূত্র এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় সৌদি যুবরাজের ঢাকা সফরের বিষয়টি আসবে। চলতি বছরের শেষ দিকে এই সফর হতে পারে।

জানা গেছে, দুই দেশ যে সমন্বিত অংশীদারত্বের কথা বলছে, এতে সময়সূচিভিত্তিক নানা খাতে সহযোগিতার প্রসঙ্গ রয়েছে। এ বিষয়গুলো একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে দুই দেশের মনোযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বড় অবকাঠামোর প্রকল্প ও উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরের সঙ্গে এ বিষয়গুলোর যোগসূত্র রয়েছে।

ঢাকার একটি সূত্র জানিয়েছে, সৌদি আরবের সুনির্দিষ্ট বিনিয়োগ প্রকল্প নিয়ে দুই দেশের রাজনৈতিক সংলাপে বিস্তারিত আলোচনা হবে না। বিনিয়োগের বিভিন্ন প্রস্তাব ও অগ্রগতি নিয়ে আগামী নভেম্বরে যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। প্রসঙ্গত, ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম রাজনৈতিক সংলাপের আগেই সৌদি আরব বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের আগ্রহের কথা জানায়।