আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ
জয়পুরহাটে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করে পুলিশ ও ছাত্রলীগের মামলা
জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় আসামির তালিকায় বিএনপির ৮২ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে। আসামির তালিকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি সহসাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম ওবায়দুর রহমান (চন্দন) ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেনের নাম রয়েছে।
জয়পুরহাট সদর থানায় করা মামলার বাদী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল হোসেন। একই ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাকারিয়া হোসেন রাজা বাদী হয়ে সদর থানায় আরও একটি মামলা করেছেন। এই মামলায় বিএনপি ও দলের সহযোগী সংগঠনের ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০০ জনকে। এ মামলায় আওয়ামী লীগ ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মারপিট করে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় জয়পুরহাট সদর থানার ওসি হুমায়ূন কবির মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশের করা মামলায় সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশকে আহত করা এবং নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটা সাজানো মামলা। বরং পুলিশের উপস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছেন।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার সকালে জয়পুরহাট বিএনপির একটি অংশ দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। এরপর বিকেল চারটায় শহরের নতুন হাট থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেনের নেতৃত্বে আরেকটি পদযাত্রা কর্মসূচি হয়। সেখান থেকে বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী হাজি বদরুদ্দীন সড়ক হয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের শান্তি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিলেন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপর দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে আসবাব ও জানালা ভাঙচুর করা হয়। ডিবি পুলিশ ৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে এসআই রুবেল বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় নাম উল্লেখ করা সবাই বিএনপির নেতা-কর্মী।
জয়পুরহাট সদর থানার ওসি হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা সরকারি কাজে বাধাদান, ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ বাদী একটি মামলা করেছে। এ মামলার দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একটি এজাহার জমা দিয়েছিলেন। এটি বুধবার সন্ধ্যায় নথিভুক্ত হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলে আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। পুলিশের সামনে আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এর ভিডিও রয়েছে। এখানে পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ ধরা পড়েছে। জয়পুরহাটের মাটি বিএনপির ঘাঁটি। পুলিশ ছাড়া মাঠে নামলে আমাদের সঙ্গে দুই মিনিটও টিকতে পারবে না। আমাদের এক দফা দাবি সেটি সরকারের পদত্যাগ। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি বাস্তবায়ন করব।’