ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধায় শুরু বর্ণমেলা, বিকেল পর্যন্ত নানা আয়োজন
ঢাকার ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে শুরু হয়েছে ‘বর্ণমেলা’। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘বর্ণমেলা’র উদ্বোধন করা হলো।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানের শুরুতে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। মাঠে-স্টলে যে যেখানে ছিলেন সেখান থেকেই কণ্ঠ মেলাচ্ছিলেন। এরপর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গান শুরু হলে খালি পায়ে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় শিশুদের হাতে ছিল রজনীগন্ধা, আর কণ্ঠে ছিল গান। খালি পায়ে ধীরলয়ে তারাও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর, অভিনেত্রী সাবিলা নূর, শিল্পী আনিসুজ্জামান সোহেল, প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ ও ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং জেসমিন জামান প্রমুখ।
বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন। বাংলা বর্ণমালা, ভাষা ও ভাষাগত ঐতিহ্যের পাশাপাশি এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় প্রদর্শিত হচ্ছে এ মেলায়।
প্রথম আলোর আয়োজনে এই বর্ণমেলায় সহযোগিতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি। সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম ও প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।
এবারও মেলায় শিশু-কিশোরদের জন্য থাকছে কিছু প্রতিযোগিতা। দশম শ্রেণি পর্যন্ত যেকোনো শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারবে এ প্রতিযোগিতায়। আছে দুরন্ত শৈশবের বর্ণাঙ্কন (ছবি আঁকা) ও বর্ণলিখন (সুন্দর হাতে লেখা) প্রতিযোগিতা। দুরন্ত শৈশবের বর্ণাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয় উদ্বোধনের পর। হাতের লেখা প্রতিযোগিতা হয় সকাল ১০টায়।
এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী নানান খেলা, বাংলা স্ক্র্যাচ কর্মশালা, বর্ণরোবটের সঙ্গে শরীরচর্চা, বর্ণ উপহার, মস্ত বর্ণ, খাবারে-পোশাকে বর্ণ, কাগজের ইশকুল, বর্ণমুখোশ, বর্ণে নাগরদোলা, বাবুল্যান্ড, গুফি ওয়ার্ল্ড, কিডস টাইম, জলপুতুল পাপেট, ঢাকা পাপেট থিয়েটার, কাকতাড়ুয়া পাপেট, জাদু, গানসহ বর্ণ নিয়ে নানা আয়োজন আছে। আরও আছে বই বর্ণালিতে প্রথমা প্রকাশন, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা, অন্যরকম বিজ্ঞান বাক্স এবং মেরিল বেবি বর্ণিল বর্ণ, সুপারমমের বাড়ি, সেপনিল আমার বর্ণ আমার হাতে। বর্ণায়নে থাকবে মা–বাবার জন্য টি-শার্টে নকশা করার সুযোগ। বর্ণে মেহেদিতে থাকবে বর্ণের নকশায় হাত রাঙানো এবং রং দিয়ে মুখ নকশা করা।
বর্ণমেলায় ছোট্ট সোনামণিদের হাতেখড়ি নেওয়ার সুযোগ থাকে। আর এই হাতেখড়ি হবে আলোকিত মানুষদের হাতে। আরও থাকবে ব্রেইল হাতেখড়ি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে ‘হাতেখড়ি’ আয়োজনটি। এসবের পাশাপাশি দিনব্যাপী বর্ণমেলায় থাকবে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন, যা এ প্রজন্মের সামনে ভাষা, কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরবে।