গুমের শিকার আরও মানুষ ভারতে বন্দী আছেন : ধারণা অধিকারের
গুমের শিকার ধামরাইয়ের রহমতউল্লাহ সম্প্রতি ফিরে এসেছেন বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকার। সংগঠনটির তথ্য অনুযায়ী, রহমতউল্লাহকে ভারতের দমদম কারাগারে সাত মাস বন্দী রাখা হয়েছিল। রহমতউল্লাহকে ভারত থেকে ফিরে পাওয়ায় গুমের শিকার আরও মানুষ ভারতে বন্দী আছেন বলে ধারণা করছে সংগঠনটি।
রোববার অধিকারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট ধামরাইয়ের নিজ বাসা থেকে র্যাব দ্বারা গুম হন বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি রহমতউল্লাহ। তাঁর পরিবার র্যাব কার্যালয়সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন কার্যালয়ে সন্ধান করলেও তাঁকে তুলে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।
অধিকার জানিয়েছে, গুম হওয়ার পর প্রায় ৯ মাস বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে রহমতউল্লাহকে চোখ বেঁধে রাখা হতো এবং ভয়ভীতি দেখানো হতো। এরপর তাঁকে ভারতে নেওয়া হয়। সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাঁকে দমদম কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়। গত শনিবার রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) মহানন্দা নদী দিয়ে রহমতউল্লাহকে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশ ইন করে। বাংলাদেশে ফিরে আসার পর এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর থানায় যান। গোমস্তাপুরের রহনপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (এসআই) মো. ফজলে বারী রহমতউল্লাহর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে রহমতউল্লাহকে পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যান।
বিজ্ঞপ্তিতে অধিকার আরও উল্লেখ করেছে, ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল চত্বর থেকে ডিবি পুলিশ দ্বারা অপহৃত হন সুখরঞ্জন বালি। পরবর্তীতে তাঁকে ভারতের দমদম কারাগারে পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমদ ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে গুম হন। পরে ওই বছরের ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে তাঁর আটকের খবর পাওয়া যায়।
অধিকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৭২১ জন গুমের শিকার হয়েছিলেন। এর মধ্যে ১৫৮ জনকে এখন পর্যন্ত ফেরত পাওয়া যায়নি। প্রকৃত গুমের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
অধিকারের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এ–সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বাংলাদেশ থেকে গুম করে ভারতে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলো সেটাই প্রমাণ করে। অধিকার মনে করে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কারাগারে বন্দী সব বাংলাদেশিদের তথ্য যাচাই করা প্রয়োজন।
অধিকারের পক্ষ থেকে গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি, গুমের শিকার ব্যক্তি ও পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থার দাবি করা হয়েছে।