এক সাংবাদিক নিহত, আহত অন্তত ২৩

রাজধানী শাহবাগ এলাকার আজ রোববার পুলিশবক্সে আগুন দেওয়া হয়।ছবি: আশরাফুল আলম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি চলার সময় সিরাজগঞ্জে প্রদীপ কুমার ভৌমিক নামের এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আজ রোববার রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় অন্তত ২৩ সাংবাদিক আহত হন।

এ নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সংঘাতে পাঁচজন সাংবাদিক প্রাণ হারালেন।

প্রথম আলোর রায়গঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিক্ষোভকারীরা গতকাল দুপুরের পর সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালান। এরপর পার্শ্ববর্তী রায়গঞ্জ প্রেসক্লাবে হামলা চালান। সেখানে অবস্থানরত সাংবাদিক প্রদীপ কুমারকে পিটিয়ে আহত করেন বিক্ষোভকারীরা। হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রদীপ কুমারের মৃত্যু হয়। তিনি দৈনিক খবরপত্র–এর রায়গঞ্জ প্রতিনিধি ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে বের হওয়া বিক্ষোভ মিছিল থেকে প্রথম আলোর ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি মজিবর রহমান খানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা তাঁর পিঠে ছুরিকাঘাতের পাশাপাশি লাঠি ও রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন। বেলা দেড়টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের জজ কোর্টের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

ঢাকাসহ পাঁচ জেলায় একাত্তর টেলিভিশনের রিপোর্টার ও ক্যামেরাপারসন হামলার শিকার হন। রাজধানীর রামপুরা–সংলগ্ন হাতিরঝিল এলাকায় বেলা একটার দিকে বিক্ষোভকারীরা একাত্তর টিভির গাড়ি ভাঙচুর করেন। এ সময় একাত্তর টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার হাবিব রহমানের ওপর হামলা চালান বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভ চলার সময় চাঁদপুরে একাত্তর টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আল-আমিন ভূঁইয়া, পটুয়াখালী প্রতিনিধি আহসানুল কবির, সিলেট প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ ও মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি জসীমউদ্দিন দেওয়ানকে মারধর করা হয়।

রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে হামলার শিকার হন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার দুজন সাংবাদিক। তাঁরা হলেন জাহিদুল ইসলাম ও মিরাজ হোসেন। হামলায় প্রতিবেদক জাহিদুল ইসলামের মাথা ফেটে যায়। তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর মাথায় বেশ কয়েকটি সেলাই দিতে হয়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শাহবাগে হামলার শিকার হন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের সিনিয়র রিপোর্টার শামীমা সুলতানা। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরে আহত হন বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের ফটোসাংবাদিক মাহমুদ হাসান।

রাজধানীর উত্তরায় নিউজ টোয়েন্টিফোর চ্যানেলের দুই সাংবাদিক আহত হন। তাঁরা হলেন রিপোর্টার মোরসালীন জোনায়েদ ও ক্যামেরাপারসন মো. মুরাদ।

জিগাতলায় বেলা দেড়টার দিকে হামলার শিকার হন দৈনিক যায়যায়দিন–এর দুই সাংবাদিক নাহিদ হাসান ও আমিরুল ইসলাম। এ সময় তাঁদের মারধর এবং মুঠোফোনসহ মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

মানিকগঞ্জে হামলায় গুরুতর আহত হন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আর এস মঞ্জুর রহমান, এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম ও আমার নিউজ পত্রিকার সাংবাদিক দেওয়ান সাদমান। আহত তিনজনকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া সিলেটে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় তিন সাংবাদিক আহত হন।