গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
গাজায় চলমান ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা যৌথভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে তাঁরা সোমবার এই বিক্ষোভ ও মিছিল করেন।
জোহরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে ভিক্টোরিয়া পার্ক, মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং রায়সাহেব বাজার মোড় হয়ে তাঁতীবাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে এসে মিছিল শেষ হয়।
এর আগে দুপুর ১২টায় গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজার প্রতি সমর্থন জানিয়ে শহীদ মিনারের সামনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সংহতি সমাবেশ করে।
মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’, ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘মুসলিম বিশ্ব ঐক্য গড়ো ফিলিস্তিন স্বাধীন করো’, ‘নেতানিয়াহুর দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমরা কারা তোমরা কারা ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ দিতে শোনা যায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দীন বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মুসলমানদের রক্ষা করার জন্য যদি শাহাদাত বরণ করতে হয়, তাহলে আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমাদের বাংলাদেশের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধভাবে আমেরিকা ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে আমেরিকার দূতাবাসের উদ্দেশ্যে লংমার্চ ঘোষণা করব এবং স্মারকলিপি প্রদান করব। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে হবে। আন্তর্জাতিক আদালতে নেতানিয়াহুর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইয়েরা ইসরায়েলি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই করে শাহাদাত বরণ করছে। আমরা ফিলিস্তিনি মুসলিমদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। আমাদের উচিত আজ থেকেই ইসরায়েলি ও আমেরিকান পণ্য বর্জন করা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘ইসরায়েল এবং আমেরিকার বর্বরেরা তো জেগেই আছে। অনেক মানবিকতা দেখানো হয়েছে, এবার মুসলিম বিশ্বকে জাগান। প্রয়োজনে মুসলিম বিশ্বের দূতাবাস ঘেরাও করে তাদের জাগ্রত করুন।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নবীজির জমিন আজ রক্তে রঞ্জিত। বাংলাদেশসহ সব মুসলিম দেশকে শক্তিশালী হতে হবে। আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে। এমন অবস্থানে যেতে হবে যাতে আমাদের আর কোনো দেশের ওপর নির্ভর করতে না হয়—চাই সেটা অস্ত্র হোক বা অন্য কোনো পণ্য।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, ‘যারা বিশ্ব মানবতার কথা বলে, তারা আজ নীরব। গণহত্যার সহায়কদের পণ্য বর্জন করে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে হবে।’