এই দফায় ১৮ জেলায় বন্যা হতে পারে

ফাইল ছবি।
ফাইল ছবি।
>

কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, বগুড়া, দিনাজপুর, নঁওগা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ী ও সুনামগঞ্জে বন্যা হতে পারে। 

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বগুড়া ও সিরাগঞ্জে বন্যা শুরু হতে পারে। পর্যায়ক্রমে বন্যার পানি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের ১৮ জেলায় বিস্তৃত হতে পারে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের অন্তত পাঁচটি নদীর পানি পাশের জেলাগুলোয় ছড়িয়ে পড়তে পারে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, পদ্মা, আত্রাই ও হাওর এলাকার নদীগুলোর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে। এক সপ্তাহ ধরে এসব নদীর পানি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ লাগবে নামতে। সব মিলিয়ে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৮ জেলায় আগামী দুই সপ্তাহ বন্যার পানি থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ব্রহ্মপুত্রের পানি কুড়িগ্রাম দিয়ে, তিস্তার পানি লালমনিরহাটে, পদ্মার পানি মুন্সিগঞ্জে ও হাওরের পানি সুনামগঞ্জ দিয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এভাবে বন্যা শুরু হতে পারে। তারপর আরও নিচের দিকের জেলাগুলোয় বন্যা হতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, উজানের পানি ছাড়াও দুই সপ্তাহ ধরে উত্তরাঞ্চলে যে টানা বৃষ্টি হচ্ছে, তা দিনাজপুর থেকে নিচের দিকে নওগাঁর আত্রাইয়ে গিয়ে পড়ছে। এতে ওই জেলা ও বগুড়ায় বন্যা হতে পারে। বাকি এলাকার বন্যা মূলত উজানের ভারত থেকে আসা পানি থেকে সৃষ্টি হবে।

তবে সব জেলায় টানা দুই সপ্তাহ ধরে বন্যা হবে, তেমনটা নয়। কোনো না কোনো জেলায় এই সময়ে বন্যার পানি থাকতে পারে। এর মধ্যে পদ্মার পানির তোড় বা স্রোত বেশি থাকতে পারে। এতে মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জে বন্যার সঙ্গে নদীভাঙনও হতে পারে।

ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশের উজানে ভারতের চেরাপুঞ্জি, আসাম, মেঘালয়সহ হিমালয়ের পাদদেশে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে। সেই পানি দ্রুত বাংলাদেশের দিকে নেমে আসে। দেশের ভেতরও বৃষ্টি বেড়ে গেছে। এ কারণে ব্রহ্মপুত্র ও পদ্মার পানি দ্রুত বাড়ছে। আগামী এক সপ্তাহ ভারতের এসব রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মৌসুমি বায়ু এবার শক্তিশালী ও সক্রিয় রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের উজানে ভারতীয় অংশে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে। সামনের দিনে এই বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। ফলে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় বন্যার আশঙ্কা আছে। তাই এই পুরো সময়ের জন্য সরকারকে বন্যা মোকাবিলায় এবং ব্যবস্থাপনার কাজের প্রস্তুতি নিতে হবে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন নদ–নদীর ১০২টি পয়েন্টের মধ্যে ৭৮টির পানি বাড়ছে। সবচেয়ে দ্রুত বাড়ছে ব্রক্ষপুত্র ও তিস্তার পানি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদ্মার পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করে যেতে পারে।