এবারের ভূমিকম্প কি ভিন্নরকম, কিসের ইঙ্গিত দেয়
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আজ সোমবার সকালে ভূমিকম্প হয়েছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) বলছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল বঙ্গোপসাগর। এ ধরনের ভূমিকম্পের ধরন নিয়ে কথা বলেছেন আবহাওয়াবিদরা।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বঙ্গোপসাগর খুব বেশি দেখা যায় না বলছেন আবহাওয়াবিদ। তবে সাগরে ভূমিকম্পের উৎপত্তিকে খুব অস্বাভাবিকও নয় বলছেন আবহাওয়াবিশেষজ্ঞ।
ইউএসজিএসের ওয়েবসাইট বলছে, সকাল ৯টা ২ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে এই ভূকম্পন অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২। উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগরে এর গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণাকেন্দ্রের পেশাগত সহকারী নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে যেসব ভূমিকম্প অনুভূত হয়, সেসবের কেন্দ্রস্থল সাধারণত আন্দামান সাগর বা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বঙ্গোপসাগর খুব বেশি দেখা যায় না।
নিজাম উদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল বঙ্গোপসাগরের পশ্চিমবঙ্গের এলাকা। এটি ঢাকা থেকে ৫২০ কিলোমিটার, কক্সবাজার থেকে ৩৪০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ৩৯৭ কিলোমিটার দূরে। উৎপত্তিস্থলটি বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে একদম পশ্চিমবঙ্গ এলাকা ঘেঁষে।
বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট এই ভূমিকম্প স্বাভাবিক কি না বা এর ফলে ভবিষ্যতে কোনো সময় সুনামির আশঙ্কা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, গত ১০০ বছরের ভূমিকম্পের ইতিহাস যদি দেখি তবে উৎপত্তিস্থল হিসেবে বঙ্গোপসাগরের এই জায়গাকে একেবারে নতুন বলা যায় না। এখানে এর আগেও ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯৯ সালে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল এই স্থান।
জিল্লুর রহমান আরও বলেন, যে ভূমিকম্প হয়েছে এর ব্যাপ্তি ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটারের গভীরের। আর এই স্থান থেকে সুনামি সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে। কারণ, এটি টেকটোনিক বাউন্ডারি বা ভূত্ত্বক সীমার বাইরে। এখানে ছোটখাটো কিছু চ্যুতি বা ক্রাস্টাল ফল্ট আছে। যেখান থেকে ছোট মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এটা একাধিকবার হয়েছে। আগের অভিজ্ঞতা বলে এখান থেকে সুনামি হয় না।