গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে রাতে, কতটুকু শক্তিশালী—জানাল আবহাওয়া অফিস

ঘূর্ণিঝড়
ফাইল ছবি

বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি আজ বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের দিকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘মিধিলি’। নামটি মালদ্বীপের দেওয়া। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এটি দ্রুতই বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূল স্পর্শ করে চলে যাবে। তবে এটি বড় আকারের কোনো ঘূর্ণিঝড় হবে না বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

আজ সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পরেই আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সভা করি। কিন্তু মিধিলি অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। তাই আমরা আজ বিকেলেই প্রস্তুতিমূলক সভা করেছি।’

এনামুর রহমান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস উল্লেখ করে বলেন, মিধিলি আগামীকাল শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তবে এটি খুব বড় আকারের ঘূর্ণিঝড় হবে না। পটুয়াখালীর খেপুপাড়া থেকে বাগেরহাটের মোংলার মাঝামাঝি দিয়ে এটি বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

গত ২৪ অক্টোবর দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে। এতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে প্রাণহানি এবং বসতবাড়ি ও ফসলও নষ্ট হয়। এরপর আবার নতুন আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আসার পথে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দিবাগত রাত তিনটার মধ্যেই এখনকার নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আর এর অগ্রভাগ বাংলাদেশের ভূখণ্ড স্পর্শ করতে পারে আগামীকাল দুপুর ১২টার দিকে। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই এটি উপকূল অতিক্রম শেষ করবে বলে এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে।’

আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় থাকা গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় আছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগোতে পারে, সেই সঙ্গে ঘনীভূত হতে পারে।

গভীর নিম্নচাপের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে থাকা মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়োহাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। আর এর কারণে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।