ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে

ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসে গতি প্রবল রয়েছেছবি: আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে দেশের উপকূলীয় ১৪ জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেওয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ মধ্যরাতে ভারতের ওডিশা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। আর এর প্রভাবেই বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা।

আজ দুপুরে দেওয়ার আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির সামনের অংশের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এসব এলাকার কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার  জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় থাকা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেছে। আজ বেলা ১২ টায়  চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ- দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং আজ মধ্যরাত নাগাদ ভারতের ওডিশা রাজ্যের পুরী ও পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপ এর মাঝখান দিয়ে ভারতের উত্তর ওডিশা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং এর কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি) বৃষ্টি হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার। এটি দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছের এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩  নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের যে গতিপ্রকৃতি তাতে এটি ভারতের ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে আজ মধ্যরাতে। তবে এর প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশের উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আগামীকালও রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি থাকতে পারে।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জন্য উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ

আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।