শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেলেন সম্রাট
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট জামিন পেয়েছেন। আজ সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তাঁকে জামিনের আদেশ দেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্রাটের আইনজীবী আফরোজা শাহনাজ প্রথম আলোকে বলেন, সম্রাট গুরুতর অসুস্থ। এর সপক্ষে চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছেন।
জামিনের ক্ষেত্রে সম্রাটকে আদালত কিছু শর্ত দিয়েছেন জানিয়ে আফরোজা শাহনাজ বলেন, সম্রাটকে তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। আর আদালতের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় জামিনের মধ্য দিয়ে সব মামলায় জামিন পেলেন সম্রাট। তাঁর মুক্তি পেতে আর কোনো বাধা নেই।
সম্রাটের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির নতুন দিন ঠিক করেছেন আদালত। আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ছিল আজ। সম্রাটকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতাল থেকে আদালতে আনা হয়।
সম্রাটের পক্ষের আইনজীবী অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেন। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষ থেকে এই আবেদনের বিরোধিতা করেন মাহামুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেন।
গত ২৪ মে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সম্রাট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে ১৮ মে এই মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। একই সঙ্গে সম্রাটকে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
ওই মামলায় ১১ মে নিম্ন আদালতে জামিন পেয়েছিলেন সম্রাট। পরে সম্রাটের জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। দুদকের করা এ মামলায় বিচারিক আদালতে জামিন পাওয়ার আগে সম্রাট তাঁর বিরুদ্ধে থাকা আরও তিনটি মামলায় জামিন পান। চার মামলার সব কটিতেই জামিন পাওয়ায় ১১ মে বিএসএসএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান সম্রাট। কারামুক্তির পর তিনি এ হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রমনা থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন। আগের দিন ১০ এপ্রিল অর্থ পাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ঢাকার আলাদা দুটি আদালত থেকে তাঁকে জামিন দেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তাঁর সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তখন র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারের সময় সম্রাট ও আরমান মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তাঁদের কাছে বিদেশি মদ ছিল। এ কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
গ্রেপ্তারের পর সম্রাট ও আরমানকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আনা হয়। সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাকরাইলের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। সম্রাটের কার্যালয়ে বন্য প্রাণীর চামড়া, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র পাওয়ার কথা জানানো হয়। বন্য প্রাণীর চামড়া রাখায় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।