ফখরুল ও আব্বাসের জামিন বহাল
রাজধানীর নয়াপল্টনে গত ৭ ডিসেম্বর পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
ফখরুল-আব্বাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন।
মামলায় ফখরুল-আব্বাসের জামিননামা দাখিল না করতে চেম্বার আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা তুলে নিয়েছেন আপিল বিভাগ।
ফখরুল-আব্বাসের জামিন প্রশ্নে রুল ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বিএনপির এই দুই নেতার জামিন আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না, সে বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. সেলিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে শুনানি করতে বলা হয়েছে।
আপিল বিভাগের আদেশের পর বিএনপির দুই নেতার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মামলায় মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের ছয় মাসের জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। ফলে তাঁদের কারামুক্তিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। তবে জামিন পাওয়া বিএনপির নেতাদের গায়েবি মামলা বা পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর একটি প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে, সর্বোপরি আইনের শাসন কায়েমের লক্ষ্যে অন্তত এই ক্ষেত্রে সরকার এ রকম পদক্ষেপ নেবে না বলে আশা করছি।’
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
বিএনপির দুই নেতার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সগীর হোসেন। বিএনপির নেতাদের পক্ষে আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, মো. আসাদুজ্জামান, কায়সার কামাল, মো. রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ শুনানিকালে উপস্থিত ছিলেন।
ফখরুল ও আব্বাসকে ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে তাঁদের বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাঁদের নয়াপল্টনে ৭ ডিসেম্বর বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলায় ফখরুল ও আব্বাসের জামিন আবেদন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে তিনবার নাকচ হয়। সর্বশেষ ২১ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে তাঁদের জামিন আবেদন নাকচ হয়। এ অবস্থায় তাঁরা হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
গত মঙ্গলবার হাইকোর্ট রুলসহ দুজনের ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ পরদিন বুধবার আবেদন করে, যা আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।
চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ৮ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। এই সময় পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট আদালতে এই দুজনের জামিননামা দাখিল না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।