পয়লা বৈশাখে তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতির দিকে ফিরে আসার আহ্বান হেফাজতে ইসলামের

পয়লা বৈশাখে ‘তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতি’র দিকে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদকে ‘নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির কারখানা’ বলে আখ্যায়িত করেছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান আজ রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পয়লা বৈশাখের সংস্কৃতিকে নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির মোড়লদের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ নব্য প্যাগানবাদী সংস্কৃতির কারখানা।’

‘ভারতপন্থী এই এলিটদের সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদকে’ রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তৌহিদবাদী গণসংস্কৃতির দিকে দেশবাসীকে ফিরে আসার আহ্বান জানান হেফাজত নেতারা।

বিবৃতিতে তৌহিদবাদী গণমানুষের বিরুদ্ধে শুধু সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদই নয়, ভারতের বশংবদ ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের হাতিয়ার হিসেবেও এটি (পয়লা বৈশাখ) ব্যবহৃত হয়েছে উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, ‘ভারতপন্থী এলিটদের সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে না পারলে আমাদের জাতীয় উৎসব ও সংস্কৃতিতে গণমানুষের তৌহিদবাদী চেতনার স্ফুরণের সুযোগ ঘটবে না।’

সে লক্ষ্যে ‘ভারতপন্থী সেক্যুলার এলিটদের’ সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

হেফাজত নেতারা আরও বলেন, ‘পৃথিবীতে ধর্মের ইতিহাসের বাইরে কোনো সভ্যতা নেই। ধর্মই হচ্ছে সভ্যতার বাপ-দাদা। এমনকি পশ্চিমা আধুনিকতার জন্মও খ্রিষ্টীয় ধর্মসভ্যতার গর্ভে।’

ধর্মনিরপেক্ষতা ও সর্বজনীনতার সংস্কৃতির ছলে মুসলমানদের ওপর বৈদিক সভ্যতা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে হেফাজতে ইসলামের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থান-কালনির্বিশেষে আমরা মুসলমানরা মিল্লাতে ইবরাহিম বা ইবরাহিম (আ.)-এর তৌহিদবাদী সভ্যতা ও ইতিহাসের ধারক ও অনুসারী। আমাদের ধর্মীয় ইতিহাস ও সভ্যতার আদি শিকড় আমরা ভুলে যেতে পারি না। তাদের এই ধূর্ত ইন্ডিয়ান প্রকল্প ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে।’

যাঁরা তৌহিদি চেতনার প্রশ্নে আপস করেন তাঁরা মুসলমানি সত্তা রক্ষা করতে পারেন না মন্তব্য করে বিবৃতিতে হেফাজতের নেতারা বলেন, ‘ভুলে যাওয়া চলবে না যে মুসলমানরাই বাংলা সনের প্রবর্তক। আর মুসলমান মাত্রই সব ধরনের প্যাগানবাদী সংস্কৃতি ও বোধবিশ্বাস থেকে মুক্ত। কিন্তু মুসলমান হয়েও যাঁরা তৌহিদি চেতনার প্রশ্নে আপস করবেন, তাঁরা বড়জোর সেক্যুলার হতে পারেন; কিন্তু কোনোভাবেই আর মুসলমানি সত্তা রক্ষা করতে পারেন না।’

‘ভারতের মদদপুষ্ট মূর্তিবাদী বা প্যাগানবাদী সাংস্কৃতিক ষড়যন্ত্রের’ ব্যাপারে বাংলাদেশের সব মুসলমানকে সচেতন হতে বিবৃতিতে আহ্বান জানানো হয়।