হাতছোঁয়া দূরত্বে বিদ্যুতের লাইন, সরানোর গা নেই
৩৩ কিলো ভোল্টের পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন চলে গেছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নূরপুর গ্রামের মসজিদ ভবনের ওপর দিয়ে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় আছেন গ্রামবাসী। লাইনটি সরানোর জন্য মঙ্গলবার তাঁরা লিখিত আবেদন করেছেন পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে।
গ্রামের বাসিন্দা মো. আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, মসজিদের ছাদে গেলে বিদ্যুতের লাইন ছোঁয়া যায়। সকালে গ্রামের শিশুরা মসজিদে পড়তে যায়, অনেকেই ছাদে ওঠে। তাই যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। লাইনটি এখান থেকে দ্রুত সরানো প্রয়োজন। কিন্তু গত তিন বছরে একাধিকবার বলা হলেও লাইনটি সরায়নি কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় তাঁরা পল্লী বিদ্যুতের জেলা কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপকের কাছে নতুন করে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, নূরপুর গ্রামের মসজিদের ওপর দিয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের লাইনটি সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে এসে দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় গেছে। তিন বছর আগে ওই স্থানে মসজিদের পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই সময়ে মসজিদের সীমানার ভেতরে পড়া বিদ্যুতের একটি খুঁটি ও সঞ্চালন লাইনটি সরানোর জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল। তারা তখন জানিয়ে দেয়, বিদ্যুতের খুঁটি ও লাইন সরাতে হলে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫১ হাজার ৩৮৭ টাকা জমা দিতে হবে। কিন্তু মসজিদ কর্তৃপক্ষের এত টাকা দেওয়ার সক্ষমতা ছিল না। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও লাইনটি এখনো সরানো হয়নি।
লাইন গেছে মসজিদ ভবনের ওপর দিয়ে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সেটি সরাচ্ছে না। উল্টো আমাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। এই গাফিলতির কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, তার দায় তাদেরই নিতে হবে।মো. আলী নূর, সভাপতি, মসজিদ কমিটি
মসজিদ কমিটির সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলী নূর বলেন, ‘মসজিদে প্রবেশের মূল ফটকের কাছেই বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে। তাতে ট্রান্সফরমার লাগানো। লাইন গেছে মসজিদ ভবনের ওপর দিয়ে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ সেটি সরাচ্ছে না। উল্টো আমাদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। এই গাফিলতির কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে, তার দায় তাদেরই নিতে হবে।’
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক অখিল কুমার সাহা বলেন, ‘গ্রামবাসীর আবেদনটি পেয়েছি। এলাকাটি পল্লী বিদ্যুতের ছাতক আঞ্চলিক কার্যালয়ের আওতায় পড়েছে। তাদের বিষয়টি জানানো হবে। এখানে কারিগরি বিষয় আছে। মাঠে গিয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজটি ঠিকাদার করবেন। তাই নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা দিতে হয়।’