স্বেচ্ছায় কারাবরণের আবেদন শরীয়তপুরের ৬০ সাংবাদিকের
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হেনস্তার প্রতিবাদে শরীয়তপুরের সাংবাদিকেরা স্বেচ্ছায় কারাবরণের আবেদন করেছেন। জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬০ জন সাংবাদিক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে আজ বুধবার এই আবেদন করেন।
‘স্বেচ্ছায় কারাবরণ করতে চাই’ শিরোনামে ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ‘রোজিনা ইসলাম তথ্য চুরির অপবাদে কারাবরণ করছেন। আমরাও সাংবাদিক এবং রোজিনা ইসলামের সহকর্মী। তথ্য চুরি করি, তা প্রচার করি দেশের মানুষের স্বার্থে। সেই দোষে আমরাও দোষী। তাই আপনার নির্বাহী আদেশে শাস্তি হিসেবে আমরা স্বেচ্ছায় কারাবরণ চাই।’
আপনাদের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আবেদন গ্রহণ করলাম। কিন্তু এর বেশি কিছু করা আমার ক্ষমতার বাইরেপারভেজ হাসান, জেলা প্রশাসক, শরীয়তপুর
আবেদনটি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনাদের আবেগ ও অনুভূতির প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আবেদন গ্রহণ করলাম। কিন্তু এর বেশি কিছু করা আমার ক্ষমতার বাইরে।’
এর আগে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কলম বিরতি রাখেন শরীয়তপুরে কর্মরত সাংবাদিকেরা। সকাল সাড়ে ১০টায় শরীয়তপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের ব্যানারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন কর হয়। তাতে অংশ নেন গোসাইরহাট প্রেসক্লাব, ডামুড্যা প্রেসক্লাব, নবীন সাংবাদিক ফোরাম, শরীয়তপুর প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন ও প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। কর্মসূচিতে একাত্ম হন নদী পরিব্রাজক দল, বিডিক্লিন, নারী নির্যাতন দমন চাঁদনী মঞ্চ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, শরীয়তপুর অনলাইন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
সকাল ১০টায় শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে টেলিভিশন সাংবাদিকদের সংগঠন শরীয়তপুর ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মানববন্ধন করে। মানববন্ধন শেষে সংগঠনগুলো জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি জমা দেয়।
স্বেচ্ছায় কারাবরণের আবেদন করা সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম, আবুল হোসেন, আবুল বাশার, রায়হান কবীর, মফিজুর রহমান, নুরুল আমীন, বি এম ইশ্রাফিল, কাজী মনিরুজ্জকমান, কাজী নাছির, রকি আহম্মেদ, এম হারুন অর রশিদ, এম ওয়াদুদ মিয়া, সাইফুল্লাহ কাওসার, শফিকুল ইসলাম, নান্নু মৃধা, মেহেদী হাসান, নুরুল ইসলাম, মনির হোসেন, শাকিল আহম্মেদ, সত্যজিৎ ঘোষ, জাহিদ হাসান, জামাল মল্লিক, খোরশেদ বাবুল, গোলাম রাব্বানি ও সাহাদাৎ হোসেন।
জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে জিম্মি না হওয়ার জন্য আমরা সরকারকে অনুরোধ করব। রোজিনাকে যাঁরা হেনস্তা করেছেন, তাঁদের বিচার চাই। রোজিনাকে অবিলম্বে মুক্তি না দিলে সাংবাদিক সমাজ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।’