স্বাস্থ্য বিভাগের অব্যবস্থাপনায় টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ নেতার ফেসবুকে পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য আতাউল মাহমুদ গতকাল শুক্রবার এই পোস্ট দেন। তিনি দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ দাস (৫৮) টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের বাইরে মারা যান। ওই দিন বেলা সোয়া তিনটার দিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ১০ শয্যার আইসিইউতে আগুন ধরার পর হাসপাতালের বাইরে একটি নর্দমার পাশে খোলা আকাশের নিচে তিন ঘণ্টা পড়েছিলেন ওই শিক্ষক। ওই শিক্ষকের বহু ছাত্রছাত্রী অবহেলায় তাঁদের প্রিয় শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া তিনটার দিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের একটি শয্যার হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলায় আগুন লাগে। ওই সময় করোনা ইউনিটের রোগীরা আতঙ্কে হাসপাতালের বাইরে অবস্থান নেন। স্কুলশিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ দাসের স্থান হয় হাসপাতালের বাইরে একটি নর্দমার পাশে। সেখানে রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে চরম দুঃসময় কাটে ওই শিক্ষক ও স্বজনদের। সন্ধ্যায় স্বজনেরা তাঁকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষককে প্রাণ দিতে হয়েছে।
এ ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এবং বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউল মাহমুদের দেওয়া পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘...আগুন লাগে ১০ শয্যাবিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিটে। আইসিইউ ইউনিটের রোগীদের সিলিন্ডার সংযুক্ত অবস্থায় অবস্থান হয় রাস্তায়। যার বলি আমার সখীপুরের পিএম পাইলট স্কুলের জনপ্রিয় শিক্ষক ধীরেন বাবু স্যার। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনাকে আর কী বলব? জাতি শুধু দেখছে স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলো। আমাদের শেরপা শেখ হাসিনা একা আর কী করবেন? শেখ হাসিনার সব অর্জনকে এভাবে আমরা একের পর এক ম্লান করে দিচ্ছি।’ তিনি এ ঘটনায় দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন।
সখীপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কে বি এম খলিলুর রহমান অভিযোগ করেন, হাসপাতালের বাইরে নর্দমার পাশে খোলা আকাশের নিচে ধীরেন্দ্রনাথ দাস কয়েক ঘণ্টা পড়ে ছিলেন। আগুন–আতঙ্ক শেষ হওয়ার পর তাঁকে কেউ ভেতরে নেয়নি। অবহেলায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।