অনার্স (স্নাতক) শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ ও প্রতি বর্ষের সেশনজট দূর করার দাবিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়েছেন ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির ফলে প্রশাসনিক ভবনের ভেতর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আটকা পড়েছেন।
আজ ১২ অক্টোবর সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। করোনো পরিস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রশাসনিক কাজ সীমিত পরিসরে চালু রয়েছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ দিকের প্রধান ফটকে তালা মেরে উত্তর দিকের ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের অনার্স পরীক্ষা হওয়ার কথা ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে। ভয়াবহ সেশনজটের কারণে সেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের কথা থাকলেও তা ১০ মাসেও প্রকাশিত হয়নি। এ ছাড়া ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়ে পাস করে বের হওয়ার কথা থাকলেও তিন বছর পরও তাঁদের স্নাতকোত্তর পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তই হয়নি। এমনি করে প্রতিটি বর্ষের শিক্ষার্থীরা গড়ে দুই থেকে তিন বছর করে সেশনজটে পড়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনার্স পরীক্ষা দেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্য বিভাগের পড়া বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়ে চাকরি করছেন। কিন্তু আমাদের ভাগ্যে ভয়াবহ সেশনজটের কারণে ক্যাম্পাসেই পড়ে থাকতে হচ্ছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই বাধ্য হয়েছি এসব কর্মসূচিতে।’
অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা সেশনজট দূরসহ একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ, পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ, আগামী চার দিনের মধ্যে সব ব্যাচের ফলাফল প্রকাশসহ অনললাইন ক্লাস চালুর দাবি জানান। বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলছিল।
জানতে চাইলে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও প্রক্টর আতিউর রহমান তাঁর বিভাগের বিবদমান সমস্যার কথা স্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষকদের সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা ও শিক্ষক–সংকটের কারণে যথাসময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়াসহ ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, যেখানে ১৫ জন শিক্ষক প্রয়োজন, সেখানে রয়েছেন মাত্র ৭ জন।