‘সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি আছে বলেই হামলার সাহস পায়’
সাংবাদিকদের মধ্যে বিভক্তি আছে বলেই তাঁদের ওপর অন্যরা হামলার সাহস পায় বলে মনে করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াছমিন। এ জন্য তিনি পুরো দেশের সাংবাদিক সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ফরিদা ইয়াছমিন আজ শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক সমাজের মধ্যে বিভক্তি আছে বলেই দুষ্কৃতিকারী মৌলবাদীরা হামলার সাহস পায়। তারা ভাবে, এদের ওপর হামলা করলেও কিছু হবে না। তা না হলে সাংবাদিকেরা কেন টার্গেট হবেন? কেন সাংবাদিকদের গাড়ি পোড়াবে? আগে তো কখনো এমন ঘটেনি। পেশার কাজে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
হেফাজতে ইসলামের হরতাল চলাকালে তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা পরিদর্শনের জন্য শুক্রবার সকালে ফরিদা ইয়াছমিনের নেতৃত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি প্রতিনিধিদল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৌঁছানোয় দুপুরে প্রতিনিধি দলটির সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দলটিতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।
প্রতিনিধি দলটির কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে হামলাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম। এ ছাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন তাঁর ওপর হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের হামলার ঘটনার বিবরণ দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে নেতারা বলেন, একাত্তর সালে জাতীয় প্রেসক্লাবে হামলার কথা তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কখনো প্রেসক্লাবে হামলা হয়নি। এবারই প্রথম এই জেলার প্রেসক্লাব আক্রান্ত হয়েছে।
মতবিনিময়কালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, ‘যেকোনো স্থানে সাংবাদিকদের ওপর আঘাত মানে, প্রত্যেকের মনে করতে হবে এটা আমার নিজের ওপর আঘাত। কারণ, এ পেশা টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। পেশাগত কাজের ক্ষেত্রে আমরা এক হয়ে দায়িত্ব পালন করব। কারণ, ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবসহ দেশের সব সাংবাদিক সমাজের পাশে আমরা আছি।’
ফরিদা ইয়াছমিন আরও বলেন, সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষকে অনেক বেশি প্রগতিশীল মনে করা হয়। সাংবাদিকেরা সব সময় প্রগতি, গণতন্ত্র এবং মানুষের কথা বলে। সাংবাদিকেরা আর দশটা মানুষের মতো দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আঘাতকে নিজেদের ওপরে আঘাত মনে করেই তাঁরা এখানে ছুটে এসেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধিদলটির সদস্যরা সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, সদর ভূমি কার্যালয়, জেলা গণগ্রন্থাগারসহ ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি স্থাপনা পরিদর্শন করেন। গত ২৬ থেকে ২৮ মার্চের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।