বরিশালে জনসমাগম হয়, এমন আচার-অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশ করতে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধসংক্রান্ত জেলা কমিটির সভায় এ কথা জানানো হয়। দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধসংক্রান্ত জেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, চিকিৎসক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত সদস্যরা বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণে বিশ্ব এখন হিমশিম খাচ্ছে। প্রথম দিকের ধাক্কা সামলিয়ে উঠতে না উঠতেই এখন দ্বিতীয় দফার সংক্রমণ প্রতিরোধে কাজ শুরু করেছে সরকার।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় বর্তমান অবস্থায় করণীয় নির্ধারণ করতে ওই সভা ডাকা হয়। এতে উপস্থিত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বিস্তারিত আলোচনার পর বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সব ধরনের সভা-সমাবেশ আয়োজনে নিরুৎসাহিত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অনুষ্ঠান আয়োজন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানোর হয়। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় বাস ও লঞ্চযাত্রীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। এতে সিদ্ধান্ত হয়, সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন পরিচালনা করতে হবে। লঞ্চ ও গাড়িতে অবশ্যই যাত্রার আগে ও গন্তব্যে পৌঁছানোর পর জীবাণুনাশক মেশানো পানি ছিটানোর মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সবাইকেই মাস্কসহ যথাযথ সুরক্ষাসামগ্রীর ব্যবহার করতে হবে। কোনো যাত্রী বা পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মাস্ক ব্যবহার না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সব ধরনের পরিবহনকে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী পরিবহন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদারক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এসব সিদ্ধান্ত ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাইদুল ইসলাম, নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. মোক্তার হোসেন, সিভিল সার্জন মনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হক, বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ধাপের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনিতেই সভা-সমাবেশ করার জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান রয়েছে। এরপরও আমরা এ ধরনের কোনো কিছু আয়োজনের আগে অনুমতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। একই সঙ্গে যেসব কর্তৃপক্ষ এসব অনুমতি দেবে, তারাও যেন এসব বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার আগে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি বিবেচনায় রাখেন, সে জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’