শীর্ষ নেতারা বিএনপির প্রার্থীদের পাশে নেই
তিনটি ধাপে বরিশাল বিভাগের ২৪টি পৌরসভার ১৩টিতে ভোট গ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে ১২টিতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও ১টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপে আরও ৫টি পৌরসভায় নির্বাচন হবে।
বিএনপির প্রার্থীদের এই হতাশাজনক ভোট প্রাপ্তির বিষয়ে দলের মধ্যে দুটি মত আছে। একটি হলো দলীয় কোন্দল। অপরটি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব বিস্তার ও সুষ্ঠু ভোট না হওয়া।
পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন এমন সাতজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেছেন, তাঁরা দলের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতা ও তাঁদের অনুসারীদের পাশে পাননি। নির্বাচনী মাঠে তাঁরা অসহায় ছিলেন। দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় তাঁরা শেষ অবধি মাঠে থেকে নিয়ম রক্ষা করেছেন মাত্র।
এ সম্পর্কে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান বলেন, এটা ভোটের নামে প্রহসন ছিল। এই ভোটের প্রচারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মাঠে নামতে দেওয়া হয়নি। আবার বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হয়নি। ভোটের সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়, এটা কেমন নির্বাচন হয়েছে।
স্থানীয় নেতাদের অসহযোগিতার বিষয়ে বিলকিস আক্তার জাহান বলেন, ‘দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতা ও তাঁদের অনুসারীরা কেন প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন না, বিষয়টি সুযোগ পেলে দলের সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনা করব।’
১৩টি পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুটি বাদে সব কটি পৌরসভায় বিএনপির দলীয় মেয়র প্রার্থীরা এক হাজার ভোটও পাননি। নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল জেলার ছয়টি পৌরসভার মধ্যে এ পর্যন্ত চারটি পৌরসভায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সব কটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কাছে বিশাল ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা। এমনকি মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থীরা তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
গত শনিবার অনুষ্ঠিত মেহেন্দীগঞ্জ ও গৌরনদী পৌর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়। এ দুটি উপজেলা বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আওতায়। উত্তর জেলার সভাপতি মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ মেহেন্দীগঞ্জের বাসিন্দা ও বরিশাল-৪ (মেহেন্দীগঞ্জ-হিজলা) আসনের সাবেক সাংসদ এবং সাধারণ সম্পাদক আকন কুদ্দুসু গৌরনদীর বাসিন্দা। বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি গৌরনদী-আগৈলঝাড়া নিয়ে গঠিত বরিশাল-১ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। অথচ এই দুই নেতা ও তাঁদের অনুসারীরা দলের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। একই ঘটনা ঘটেছে গত ২৮ ডিসেম্বর সম্পন্ন হওয়া বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন বাকেরগঞ্জ ও উজিরপুর পৌর নির্বাচনে।
এ সম্পর্কে উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ বলেন, ‘একাধিকবার যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সেখানে গেলে হামলা হতে পারে এমন আভাস পেয়ে আর যাওয়া হয়নি।’