২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

লেখক মুশতাকের সুরতহালে আঘাতের চিহ্ন পাননি ম্যাজিস্ট্রেট

গাজীপুরে ময়নাতদন্ত শেষে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়
প্রথম আলো

ময়নাতদন্ত শেষে আজ শুক্রবার দুপুরে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদের লাশ (৫৩) স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তাঁর লাশ গাজীপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে রওনা হন স্বজনেরা। এর আগে লাশের সুরতহাল করার সময় শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাননি বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। 

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ বেলা ১১টায় গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. অসিউজ্জামান চৌধুরী লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এরপর গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক মো. সাফি মোহাইমেন লাশের ময়নাতদন্তের কাজ শেষ করেন। ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ দুপুর সাড়ে ১২টায় লাশ তাঁর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে। মুশতাকের  চাচাতো ভাই নাফিসুর রহমানসহ অন্য স্বজনেরা লাশ বুঝে নেন।

গাজীপুর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. অসিউজ্জামান চৌধুরী বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।

আজ সকালে গাজীপুর হাসপাতালের মর্গে যান মুশতাকের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা। মর্গের সামনে তাঁরা আহাজারি করেন। আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা দাবি করে বলেন, কারাগারের বাইরে থাকলে হয়তো তাঁকে এভাবে মরতে হতো না। মুশতাকের মৃত্যুতে পরিবার-পরিজন ও সবার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

সকাল থেকেই হাসপাতালের সামনে অবস্থান করেন লেখক মুশতাকের কাছের বন্ধু ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একই মামলার আসামি (বর্তমানে জামিনে আছেন) দিদারুল ভূইয়া। তিনি মুশতাকের লাশ দেখে মর্গের সামনে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। তিনি বলেন, ‘আমি, মুশতাক ও কিশোর প্রথমে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলাম। এরপর আমাদের কাশিমপুর নিয়ে আসে। কাশিমপুর এসে আমাদের আলাদা করে রাখা হয়। এ কারণে বন্ধু মুশতাকের সঙ্গে দেখা হয়নি। এভাবে লাশ দেখতে হবে, কখনো ভাবতে পারিনি।’ তিনি বলেন, 'এই দেশে কেউ স্বাধীন নয়। হয়তো মিডিয়ার সামনে কথা বললে আরেকটা মামলা খেয়ে যাব। তাই আর বেশি কথা বলতে চাই না।’ পরে তিনি জানান, বাদ আসর মুশতাকের লাশ লালমাটিয়ার মিনা মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আজিমপুরে তাঁর দাফন হবে।

কেন্দ্রীয় শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক আরমান বলেন, ‘আমাদের বলার, লেখার স্বাধীনতা নেই। যদি লিখতে না পারি, তাহলে এই স্বাধীনতা দরকার আছে কি? তবে আশাবাদী, একদিন সঠিক বিচার হবে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দী লেখক মুশতাক আহমেদ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মারা গেছেন। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন।

কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুশতাক আহমেদ গতকাল সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন