মোটরসাইকেলচাপায় আহত শিশুটির চেতনা ৩ দিনেও ফেরেনি
হাসপাতালের মেঝেতে কাত হয়ে শুয়ে আছে ছয় বছরের কন্যাশিশুটি। নিশ্চল-নিথর দেহ। চোখ দুটি বন্ধ। মোটরসাইকেলচাপায় আহত হওয়ার তিন দিনেও আজ বৃহস্পতিবার শিশুটির চেতনা ফেরেনি। যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসাধীন। শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের মেঝেতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শিশুটির নাম সাথী খাতুন। সে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার চাঁচই গ্রামের মেজর শেখের মেয়ে। মঙ্গলবার বিকেলে বাড়ির সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় মোটরসাইকেলের চাপায় সে আহত হয়।
আজ সকালে হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে প্লাস্টিকের মাদুরের ওপর কম্বল বিছানো শয্যায় শুইয়ে রাখা হয়েছে সাথীকে। তার চোখজোড়া বন্ধ। পাশে বসে আছেন তার খালা তানিয়া খাতুন। একটু দূরে দাঁড়িয়ে মামা নাজিম শিকদার।
নাজিম শিকদার বলেন, ১৭ বছর আগে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার মেজর শেখের (৩৫) সঙ্গে তাঁর বোন জেসমিন বেগমের (৩০) বিয়ে হয়। তাঁদের তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। সাথী ভাইবোনদের মধ্যে চতুর্থ। তাঁর বোন জেসমিন কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধী। বিয়ের পর থেকে ছেলেমেয়ে নিয়ে জেসমিন তাঁদের বাড়িতে থাকেন। ভগ্নিপতি কয়েক মাস পর হঠাৎ আসেন। পাঁচ-সাত দিন থেকে আবার কোথায় যেন চলে যান। মঙ্গলবার বিকেলে সাথী বাড়িতেই ছিল। এ সময় গ্রামের একটি বাড়িতে আগুন লাগে। খবর শুনে অন্যদের সঙ্গে সাথীও সেই বাড়িতে যায়। সেখান থেকে সে বাড়ি ফিরছিল। বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি দ্রুতগামী মোটরসাইকেল তাকে চাপা দেয়। এতে তার মাথায় ও বাঁ হাতে আঘাত লাগে। সে অচেতন হয়ে যায়। আজ তিন দিনেও মেয়েটির জ্ঞান ফেরেনি।
যশোর মেডিকেল কলেজের শিশু সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শরিফুজ্জামান রঞ্জু বলেন, শিশুটির অবস্থা খুব ভালো নয়, আবার খুব মন্দও নয়। আগের চেয়ে তার অবস্থার একটু উন্নতি হয়েছে। কিছুটা নড়াচড়া করছে। তবে এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি। এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। আরও এক-দুই দিন গেলে তার শারীরিক অবস্থা বোঝা যাবে। তিনি বলেন, ‘উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিবার তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে পারেনি। এ জন্য আমরা হাসপাতালে রেখে শিশুটিকে চিকিৎসা দিচ্ছি।’