মসজিদে বিস্ফোরণ
লিকেজের খোঁজে আজ মাটি খুঁড়ছে না তিতাস
তিতাস গ্যাসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা বলেছেন, বিস্ফোরণে মসজিদের ইমামসহ ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সবকিছু মিলিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় সেখানে কাজ শুরু করলে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাসের লিকেজ অনুসন্ধানে তিতাস কর্তৃপক্ষের মাটি খোঁড়ার করার কথা থাকলেও রোববার তা হচ্ছে না। সকালে তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের শ্রমিকেরা মাটি খোঁড়ার কাজ করতে যান। তবে তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। এতে দুই দিন ধরে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাদের লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায়, কেরোসিনের স্টোভ ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে। অনেকে আবার হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন।
আজ মাটি খোঁড়ার কাজ না করার জন্য এলাকাবাসী ও পুলিশের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম তল্লা এলাকার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রোববার সকাল ৭টার দিকে পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামের মসজিদের সামনে সড়কের মাটি খোঁড়ার জন্য ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক কোদাল, টুকরিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে কাজে যান। তাঁরা সেখানে কিছুক্ষণ থাকার পর তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে কাজ না করার কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মাটি খোঁড়ার জন্য শ্রমিক পাঠানো হয়েছিল। তাদের ফেরত আনা হয়েছে। আজকের দিনটি কাজ না করার জন্য এলাকাবাসী ও পুলিশের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। পুলিশের পক্ষ থেকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে কাজ না করার কোনো পরামর্শ দেওয়া হয়নি।’
এর আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি গ্যাসের লিকেজের বিষয়ে মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে মাটি খুঁড়ে দেখার নির্দেশ দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বিস্ফোরণে মসজিদের ইমামসহ ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। মৃতদের লাশ আসছে এলাকায়। সবকিছু মিলিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় সেখানে কাজ শুরু করলে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার কারণে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের কেউ সেখানে রোববার কাজ করবেন না। সোমবার কাজ শুরু করা হতে পারে বলে তিনি জানান।
তিতাস গ্যাস কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। গ্যাস চালুর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।