ভ্রূণ হত্যার পর মাগুর মাছের খামারে ফেলার অভিযোগ গৃহবধূর, স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা

যশোর জেলার মানচিত্র

যশোরে গর্ভের ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে স্বামী-শ্বশুর-শাশুড়িসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক গৃহবধূ। গতকাল বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিকের আদালতে মামলাটি করা হয়।

বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ জুলাই।

মামলার আসামিরা হলেন যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী গ্রামের আবু তালেব সানা ও তাঁর স্ত্রী তহমিনা খাতুন, ছেলে রাজু আহম্মেদ ও মেয়ে বিলকিস আরা। মামলার বাদী হলেন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের মিন্টু আলীর মেয়ে কেয়া খাতুন।

আদালত ও মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট কেয়া খাতুনকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন কেশবপুরের রাজু আহম্মেদ। কিছুদিন যেতে না যেতেই আসামিরা যৌতুকের দাবিতে কেয়ার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। এরই মধ্যে কেয়া অন্তঃসত্ত্বা হন। এতে মনঃক্ষুণ্ন হয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলার জন্য তাঁকে নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা ষড়যন্ত্র করে গত ১২ এপ্রিল কেয়াকে জোর করে ওষুধ খাইয়ে দেন। এরপর থেকে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়। এ ঘটনার তিন দিন পর বেলা ১১টার দিকে তাঁর গর্ভপাত হয়। পরে মৃত বাচ্চাকে দাফন না করে বাড়ির পাশের একটি বিদেশি মাগুর মাছের খামারের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। কেয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে কেশবপুরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে বাবার বাড়ি এসে তিনি আদালতে মামলাটি করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহনাজ আকতার বলেন, পাঁচ মাসের সন্তান নষ্ট করে মাগুর মাছের খামারে ফেলে দেওয়া হয়েছে, যা অপরাধ ও চরম অমানবিক। ওই গৃহবধূ এ বিষয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।