বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিসৌধের ভিত্তিফলক
ভেঙে ফেলার ৪৬ বছরেও পুনঃস্থাপিত হয়নি
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন সামরিক শাসক বঙ্গবন্ধুর নামসংবলিত ভিত্তিফলক ভেঙে ফেলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে উন্মোচিত টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতিসৌধের ভিত্তিফলক ভেঙে ফেলার ৪৬ বছর পরও পুনঃস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অযত্ন-অবহেলায় ভিত্তিস্তম্ভটি আজও পড়ে আছে শহরের কেন্দ্রস্থলে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে। নতুন প্রজন্ম জানে না, এই ভিত্তিফলকটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি।
মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আসেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। এরপর ২৪ জানুয়ারি ঢাকার বাইরে প্রথম সফরে আসেন টাঙ্গাইলে। সেদিন শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তমের নেতৃত্বে এ বাহিনীর যোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র জমা দেন। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনিসুর রহমান জানান, অস্ত্র জমা নেওয়ার পর বিদ্যালয়ের পাশেই পুলিশ প্যারেড ময়দানে পায়ে হেঁটে যান বঙ্গবন্ধু। তিনি সেখানে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেযে
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তৎকালীন সামরিক শাসক বঙ্গবন্ধুর নামসংবলিত ওই ভিত্তিফলক ভেঙে ফেলেন। পরে সেখানে সাদা একটি পাথর লাগিয়ে রাখা হয়। আশির দশকে পৌর উদ্যানে শহীদ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয় এবং পুলিশ প্যারেড ময়দানের নামকরণ করা হয় ‘শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যান’। সেখানে উন্মুক্ত মঞ্চ, বীরশ্রেষ্ঠদের ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নামসংবলিত ভিত্তিফলকটি আজও স্থাপন করা হয়নি। এ প্রজন্মের তরুণেরা জানেই না এই স্মৃতিসৌধের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেছিলেন স্বয়ং বঙ্গবন্ধুজ
গতকাল বৃহস্পতিবার শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে উন্মুক্ত মঞ্চে চলছে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। মাঠজুড়ে চলছে মেলা। মাঠের এক কোনায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হাতে উন্মোচন করা ভিত্তিস্তম্ভটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সেখানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন তরুণ। আশিকুর রহমান নামের এক তরুণকে স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেই জানালেন, তাঁরা জানেন না এটা কিসের স্তম্ভ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক জানান, শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানটি উন্নয়নের জন্য প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি অনুমোদন হলে উদ্যানটি দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলা হবে। সেই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর হাতে উন্মোচন করা স্মৃতিফলকটিও পুনরায় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।