জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রির আয় থেকে উদ্বৃত্ত আট কোটি টাকা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করার অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ তদন্তের জন্য আজ বুধবার দুপুরে ইউজিসির তিন সদস্যের কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ফরম বিক্রি করে ১৯ কোটি ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আয় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই বছর শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতা বাবদ খরচ দেখানো হয় ৮ কোটি ১ লাখ ২২ হাজার টাকা। এ ছাড়া বিজ্ঞাপন, ভর্তি নির্দেশিকা ছাপা, পরীক্ষার সরঞ্জাম ক্রয়সহ অন্যান্য খাতে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। বাকি ৮ কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন বলে অভিযোগ ওঠে।
ইউজিসি সূত্র জানায়, ভর্তি ফরম বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ৬০ শতাংশ অর্থ ভর্তি পরিচালনার জন্য সার্বিক ব্যয় নির্বাহের নিয়ম আছে। বাকি ৪০ শতাংশ অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা রাখতে হয়। কিন্তু এই অর্থ ভাগ-বাঁটোয়ারা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এই অভিযোগ তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক আবু তাহেরের সঙ্গে কমিটির সদস্য ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক মোস্তাফিজার রহমান এবং ইউজিসির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক গোলাম দস্তগীর উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম, সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) নূরুল আলম, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) শেখ মো. মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ রাশেদা আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে আবু তাহের সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার আর্থিক হিসাবের সব নথিপত্র সংগ্রহ করেছি আমরা। তদন্তের বাকি কাজ শেষ করে শিগগিরই বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, ‘তাঁরা আমাদের কাছে যেসব নথিপত্র চেয়েছেন, সেগুলো তাঁদের হাতে তুলে দিয়েছি। বাকিটা তদন্ত কমিটির ব্যাপার।’