বিভাগীয় শহর রংপুর: ক্লাব আছে, মাঠে খেলা নেই
ক্রিকেট, ফুটবলের বাইরে রংপুরে ভলিবল, কাবাডি, হ্যান্ডবলের অন্তত পাঁচটির বেশি করে ক্লাব আছে। কিন্তু বিভাগীয় শহর হলেও রংপুরে নিয়মিত এসব খেলার প্রতিযোগিতামূলক আসর বসতে দেখা যায় না। শখের বসে বা পেশাদারি মনোভাব নিয়ে যাঁরাই এসব খেলার অনুশীলন করেন, তাঁদের তা করতে হয় নিজেদের চেষ্টায় বা ক্লাবগুলোর সহযোগিতায়।
এতে এসব খেলায় নতুন করে দক্ষ খেলোয়াড় তৈরি হওয়ার পরিমাণ খুবই কম। অন্যদিকে ক্লাবগুলো প্রতিযোগিতামূলক আসর না বসার পেছনে জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে দায়ী করছে। অথচ বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তারাই জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করেন। অন্যদিকে ক্রিকেটের জন্য আলাদা স্টেডিয়াম বা মাঠ থাকলেও বাকি সব খেলার অনুশীলন ও আসর বসে জেলা শহরের হনুমানতলা এলাকার রংপুর স্টেডিয়ামে।
ক্রীড়া সংস্থা ও বিভিন্ন ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, রংপুর স্টেডিয়ামেই ভলিবলের ১০টি (পুরুষ) ক্লাব অনুশীলন করে। আটটি করে আছে পুরুষ ও মহিলাদের হ্যান্ডবল ক্লাব। কাবাডিতে পুরুষদের ক্লাব আছে ১২টি। বর্তমানে হকির কোনো ক্লাব নেই।
রংপুরের একসময়ের হকি খেলোয়াড় ইকরামুল কবির সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেলা না থাকায় বর্তমানে খেলছি না। তবে মাঝেমধ্যে মাঠে আগ্রহী হকি খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিই। খেলোয়াড়দের আগ্রহ দেখে আশা করছি, সংকট কাটিয়ে হকির আবার সুদিন ফিরে আসবে।’
একসময় মহিলা হ্যান্ডবল খেলায় জাতীয় দলে রংপুর থেকে ১৪ খেলোয়াড়ই অংশগ্রহণ করেছিলেন। মহিলা ভলিবলেও জাতীয় দলে রংপুর থেকে পাঁচ খেলোয়াড় ছিলেন। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহসভাপতি মঞ্জুর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ক্লাবগুলোও সব সময় সহযোগিতা করে না। লিগ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ থাকে না।
জেলার সদ্দপুষ্করিণী যুব স্পোর্টিং ক্লাব নিজেদের উদ্যোগে রাগবি খেলার আয়োজন করে। এই ক্লাবের প্রশিক্ষক মিলন খান বলেন, নিজেদের চেষ্টা ও অর্থায়নে রাগবির অনুশীলন হচ্ছে। এতে বড় সাফল্যও এসেছে। ক্লাব থেকে তিন খেলোয়াড় ঢাকায় খেলছেন।
গত বছর জেলায় সবশেষ ভলিবলের প্রতিযোগিতামূলক আসর বসে। তবে এর আগের আট বছর কোনো আসরই বসেনি। হ্যান্ডবল খেলাও অনিয়মিত। সবশেষ এই খেলার আসর বসে ২০১৭ সালে। জেলায় ভলিবলের প্রশিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, এভাবে চললে নতুন খেলোয়াড় তৈরি হবে না। আর খেলোয়াড় না থাকলে ক্লাবগুলোও শুধু নামে চলবে। ক্লাব টিকে থাকার বিষয়ে সিটি হ্যান্ডবল ক্লাবের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে লিগ না হলে টিকে থাকা আসলেই কঠিন।