বিধিনিষেধ অমান্য, নাটোরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই পক্ষের পৃথক কর্মসূচি
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নাটোরে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিবদমান দুটি পক্ষ আজ মঙ্গলবার দুটি ভিন্ন স্থানে নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের জন্মদিনও পালন করা হয়। তাঁদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কোনো বালাই ছিল না। সংঘাত এড়াতে শহরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে সকালে শহরের কান্দিভিটায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কেক কাটা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। একই সময় একই স্থানে সদর উপজেলা ও নাটোর পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগও পৃথক কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা সকালে দলীয় কার্যালয় চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে সারা শহরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা সকালে দলীয় কার্যালয় চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দেয়।
শেষ পর্যন্ত পুলিশের অনুরোধে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সেখান থেকে ফিরে এসে শহরের কানাইখালীতে বঙ্গবন্ধুর ছবিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে সেখানে কেক কেটে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। এখানে সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মীও অংশ নেন। বিকেলে জেলা কমিটির উদ্যোগে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নাটোর জেলার চার সাংসদসহ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও সৈয়দ গোলাম মোর্তুজা প্রমুখ যুক্ত ছিলেন।
একই সময় উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ দলীয় কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। কেক কেটে তারা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সজীব ওয়াজেদের জন্মদিন পালন করে। এ সময় সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি অনুষ্ঠানস্থলে শত শত নেতা–কর্মী জমায়েত হয়েছিলেন। সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে তাঁরা দলে দলে মোটরসাইকেলে করে চলাফেরা করেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, একজন সাংসদের অসহিষ্ণু আচরণের কারণে তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারেননি। পরে তাঁরা কানাইখালীতে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান করতে বাধ্য হয়েছেন। পাশাপাশি প্রতিপক্ষের হামলার আশঙ্কা ও পুলিশের বেষ্টনীর কারণে তাঁরা স্বাভাবিকভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারেননি। এ কারণে ইচ্ছা থাকলেও তাঁদের নেতা-কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয়নি।
দলীয় কার্যালয়ের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সরকারে থাকা অবস্থায় যদি পুলিশ পাহারায় কর্মসূচি পালন করতে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব? বিতর্কিত নেতারা দলের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত থেকে আসা ক্যাডারদের নিয়ে দলীয় অফিস দখল করেন। এ অবস্থায় কর্মসূচি পালনে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা বা করানো খুবই মুশকিল।’
জানতে চাইলে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা নেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সতর্ক করে দিয়েছিলেন। কখনো তাঁরা মেনেছেন, কখনো মানেননি। বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। তবে সবার মুখে মাস্ক ছিল বলে জেনেছি। দলীয় কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ ঠেকানো মুশকিল।’