বিক্রির জন্য মাংসের দোকানে আনা শকুন উদ্ধার

মাদারীপুরে উদ্ধার হওয়া বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির একটি শকুন। সোমবার বিকেলে শহরের বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে বিলুপ্তপ্রায় একটি শকুন উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। আজ সোমবার বিকেলে শহরের পুরার বাজার এলাকার একটি মাংসের দোকান থেকে শকুনটি জীবিত উদ্ধার করা হয়। বিরল প্রজাতির এই পুরুষ শকুনটির ওজন প্রায় ১২ কেজি বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের পুরান বাজার এলাকার কাঁচাবাজারের এক মাংসের দোকানে খাঁচার ভেতরে বন্দী অবস্থায় শকুনটি ছিল। শকুনটি তিনি বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন লোকের সঙ্গে দর-দামও করছিলেন। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বন বিভাগের কাছে খবর আসে, একটি শকুন খাঁচায় বন্দী অবস্থায় আছে। পরে জেলার বন বিভাগের সদস্যরা ওই কাঁচাবাজারে গিয়ে শকুনটি জীবিত উদ্ধার করেন।

স্থানীয় আবদুল হক নামের এক কলেজছাত্র বলেন, শকুনটি প্রায়ই শহরের কবুতর পালনকারীর কবুতর খেয়ে ফেলত। পরে বিরক্ত হয়ে এক কবুতর পালনকারী কৌশলে শকুনটিকে খাঁচায় বন্দী করে। পরে ওই কবুতর পালনকারী পুরান বাজার এলাকার কাঁচাবাজারে এক মাংস বিক্রির দোকানে শকুনটি রাখে বিক্রির উদ্দেশ্যে। পরে পুলিশ ও বন বিভাগের সদস্যদের দেখে তিনি সরে পড়েন।

কুনটিকে আপাতত চরমুগরিয়া ইকোপার্কে বানরের খাঁচায় বন্দী রাখা হবে। পরবর্তীতে খুলনা বন বিভাগের সদস্যরা শকুনটি নিয়ে যাবেন।
ছবি: প্রথম আলো

জেলার ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা তাপস কুমার সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার হওয়া শকুনটির বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও খুলনা বন বিভাগকে জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে শকুনটিকে হস্তান্তরের জন্য খুলনা থেকে একটি দল মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। তবে তাদের পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে। তাই শকুনটিকে আপাতত চরমুগরিয়া ইকোপার্কে বানরের খাঁচায় বন্দী রাখা হবে। পরবর্তী সময়ে খুলনা বন বিভাগের সদস্যরা শকুনটি নিয়ে যাবেন।

তাপস কুমার বলেন, শকুনটি পুরোপুরি সুস্থ আছে। ডানা মেলে উড়তেও পারবে শকুনটি। প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের মাধ্যমে শকুনটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে।

সরকারি মাদারীপুর কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সাইদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির শকুন স্থায়ীভাবে বসবাস করত। এর মধ্যে রাজশকুন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে কিছু দেশি শকুন টিকে আছে। এই দেশি শকুনকে আবার বাংলা শকুনও বলে। এটি দক্ষিণ এশিয়ার এনডেমিক পাখি। বাংলা শকুন বর্জ্যভুক হিসেবে ‘প্রাকৃতিক পরিষ্কারক’ হিসেবে পরিচিত। এর বৈজ্ঞানিক নাম Gyps bengalensis। ১৯৯০ সাল থেকে ভারতীয় উপমহাদেশে বাংলা শকুনসহ অন্যান্য শকুনের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমছে।