বগুড়ায় বিষাক্ত মদ পানের ঘটনায় আরও দুজনের মৃত্যু
বগুড়ায় বিষাক্ত মদ পানের ঘটনায় গতকাল বুধবার আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এই ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণহানি হলো। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকায় করতোয়া হোমিও ল্যাবরেটরিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১ হাজার ৫০০ লিটার মদ জব্দ করেছে।
মৃত দুজন হলেন সারিয়াকান্দি উপজেলার বালুচর এলাকার ইউসুফ (৪০) ও লাজু (৩০)।
আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শহরের নাটাইপাড়া করতোয়া হোমিও ল্যাবরেটরিতে জেলা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশ জানায়, ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকার একটি বাসায় গড়ে তোলা হয়েছিল অবৈধ মদের কারখানা। এই কারখানায় হোমিও ওষুধের আড়ালে অ্যালকোহলের সঙ্গে খাওয়ার অযোগ্য মিথানল মিশিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি হচ্ছিল ‘ভেজাল মদ’। কারখানা থেকে ১ হাজার ৫০০ লিটার মদ জব্দ করা হয়।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবির প্রথম আলোকে বলেন, করতোয়া হোমিও ল্যাবরেটরি থেকে ১ হাজার ৫০০ লিটার রেক্টিফাইড স্পিরিট জব্দ করা হয়েছে। এত বিপুল পরিমাণ স্পিরিট এই কারখানায় কীভাবে এল, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বগুড়ার উপপরিচালক মো. মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, করতোয়া হোমিও হলের মালিক সাহেদুল ইসলামের নামে বছরে ২৯ লিটার রেক্টিফাইড স্পিরিট বরাদ্দ আছে।
এর আগে গতকাল বুধবার সকালে বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী এলাকার পারুল হোমিও ল্যাবরেটরি ও পুনম ল্যাবরেটরি নামের দুটি হোমিও কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় আবাসিক বাসায় কারখানা স্থাপন করে অবৈধভাবে ভেজাল মদ তৈরির প্রমাণ মেলে। অভিযানে পারুল হোমিও ল্যাবরেটরি থেকে এক থেকে তিন লিটারের ২০টি এবং পুনম হোমিও ল্যাবরেটরি থেকে ১৪টি কাচের বোতলভর্তি স্পিরিট জব্দ করা হয়। গতকাল সন্ধ্যায় শহরের গালাপট্টির মাহি হোমিও হল ও দ্য মুন হোমিও হলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেন। এক দোকানমালিকের দুই লাখ এবং আরেক দোকান মালিকের দেড় লাখ টাকা অর্থদণ্ড হয়।
এদিকে আমাদের শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, বিষাক্ত মদ পানে প্রাণহানির ঘটনার পর শেরপুরে থানা-পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় শেরপুর পৌর শহরে অভিযান চালিয়ে একজন মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার ও ১৭০ লিটার দেশে তৈরি মদ জব্দ করা হয়।
গতকাল শহরের সকাল বাজার ও বৈকাল বাজার এলাকায় পৃথক অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) গাজিউর রহমান। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় অভিযান চলে শহরের সকাল বাজারের মধ্যে। মদ বিক্রির বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় সুকুমার দত্ত (৫৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার এবং বিক্রির জন্য রাখা ১৭০ লিটার মদ জব্দ করা হয়। গতকাল রাত সাতটার দিকে শহরের বৈকাল বাজার এলাকায় অভিযান চালালেও পুলিশ কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য উদ্ধার করতে পারেনি। শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।