পাহাড়ি পথে অন্য রকম এক সাইকেল দৌড়
পদে পদে ঝুঁকি ছিল। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। উল্টে পড়ে হাত-পায়ে কিছুটা কাটাছেঁড়া হলেও সাইক্লিস্টরা থামেননি।
টিলা ও চা-বাগানের ভেতর দিয়ে উঁচুনিচু পথ। কোথাও খাড়া হয়ে ওপরে উঠে গেছে পথটি। আবার ঢালু হয়ে নেমেছে নিচে, সমতলে। পথের কোথাও ইট ও কাঁকর বিছানো। কোথাও ধুলার গাঢ় স্তর জমে আছে। ভাঙাচোরা গর্ত স্থানে স্থানে। পাকা রাস্তা খুব সামান্যই। এ রকম অমসৃণ, অসমতল ও ঝুঁকিপূর্ণ পথে বাইসাইকেল চালিয়ে চলল একদল সাইক্লিস্ট।
গতকাল শুক্রবার সাইকেল দৌড় প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় মৌলভীবাজারে। ‘মৌলভীবাজার এমটিবি চ্যাম্পিয়নশিপ–২০২১’ নামের এ প্রতিযোগিতার আয়োজনে ছিল রেস বাংলাদেশ। এটা সংগঠনটির আয়োজনে দ্বিতীয় প্রতিযোগিতা। স্থানীয়ভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজক ছিল মৌলভীবাজার সাইক্লিং কমিউনিটি। আয়োজনে সহায়তা করে মৌলভীবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা। রেস বাংলাদেশের আয়োজনে প্রথম প্রতিযোগিতা হয়েছিল কুমিল্লায়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, দেশের ২৬টি জেলার ১১৫ নারী-পুরুষ সাইক্লিস্ট এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। গতকাল সকাল আটটায় মৌলভীবাজার স্টেডিয়াম এলাকা থেকে শুরু হয় সাইকেল দৌড়। উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মিছবাহুর রহমান। অংশগ্রহণকারীরা উত্তর জগন্নাথপুর, গোয়ালবাড়ি, কড়ালি টিলা, বর্ষিজুরা ইকোপার্ক, পশ্চিম কালেঙ্গা, হামিদিয়া চা-বাগান, গজিমারা ও দেওরাছড়া চা-বাগান ঘুরে পুনরায় স্টেডিয়ামে ফিরে আসেন।
এ পথের দৈর্ঘ্য ছিল ৩৫ কিলোমিটার। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা, উঁচুনিচু, ভাঙাচোরা, অমসৃণ, গর্তে ভরা এ পথে পদে পদে ঝুঁকি ছিল। ছোটখাটো দু-চারটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। পথের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে উল্টে পড়েন কয়েকজন সাইক্লিস্ট। এতে হাত-পায়ে কিছুটা কাটাছেঁড়া হলেও তাঁরা কেউ থামেননি। প্রতিযোগিতাটি সফল করতে পথের বাঁকে, পথের মোড়ে দিকনির্দেশনা দিতে সাতসকাল থেকেই দাঁড়িয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। এ ছাড়া আগে থেকেই কাগজে পথনির্দেশনার দিকচিহ্ন টাঙিয়ে রাখা ছিল। প্রায় অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবক এসব কাজ করেছেন। পথে পথে স্থানীয় লোকজন হাততালি দিয়ে সাইক্লিস্টদের অভ্যর্থনা জানান।
বিকেলে মৌলভীবাজার স্টেডিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া। এ সময় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের নগদ টাকা ও পদক তুলে দেওয়া হয়।