পাওনা টাকার জন্য গাছে বেঁধে নির্যাতন: যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার
সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় পাওনা টাকার জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক দপ্তরিকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শাহনুর মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার লালবাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার উপপরিচালক (এসআই) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন শাহনুরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শাহনুর মিয়ার বাড়ি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় শিমুলবাক ইউনিয়নের মুক্তাখাই গ্রামে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
তবে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন বলেছেন, ঘটনা জানার পরই শাহনুরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শাহনুরের নির্যাতনের শিকার তোফায়েল আহমদের (৩২) বাড়িও একই গ্রামে। তিনি মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার তোফায়েল বাদী হয়ে শাহনুর মিয়ার বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে শাহনুর মিয়ার কাছ থেকে একই গ্রামের শাহ জাহান এক লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। এই টাকার জামিনদার ছিলেন শাহ জাহানের চাচাতো ভাই তোফায়েল আহমদ। কিন্তু শাহ জাহান সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। কিন্তু শাহনুর টাকা ফেরত পাননি। একপর্যায়ে শাহ জাহান গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। এতে ক্ষুব্ধ হন শাহনুর। গত রোববার দুপুরে তিনি স্কুলে গিয়ে তোফায়েলকে বের করে গাছের গুঁড়িতে বেঁধে মারধর করেন। সেই ভিডিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
১৪ মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহনুর মিয়া গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন তোফায়েল আহমদকে। দু–একজন তোফায়েলকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাঁদের ওপরও ক্ষুব্ধ হন শাহনুর। পরে গ্রামের অন্য লোকদের সহায়তায় তোফায়েলকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর পরিবারের লোকজন।
তোফায়েল আহমদের বড় ভাই সালেহ আহমদ বলেন, তাঁর ভাইকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। শাহনুরকে গ্রামের মানুষ ভয় পান। তাঁর বিরুদ্ধে কেউ কোনো কথা বলে না। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
মুক্তাখাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিযন পরিষদের সাবেক সদস্য তাজউদ্দিন বলেন, পাওনা টাকা আদায় করা নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মুক্তাদীর হোসেন বলেন, ঘটনার পর শাহনুর মিয়া পালিয়ে যান। আজ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।