বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন যা–ই হোক, আমরা বিশ্বাস করি না। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দেশে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’ সারা দেশে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহের হরিকিশোর রায় সড়কে মহানগর বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘নবগঠিত নির্বাচন কমিশনকে বিএনপির মেনে নেওয়া উচিত’ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে ফখরুল বলেন, ‘তিনি নির্বাচন কমিশন নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত মত। আমি তাঁকে (জাফরুল্লাহ) অনেক সম্মান করি। তিনি অত্যন্ত ভালো মানুষ। তবে বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন মেনে নেওয়ার কথা বলার মতো তিনি কেউ নন।’
নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সরকার তেল ও গ্যাসসহ তিন থেকে চার দফা নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছে। ঢাকাসহ সারা দেশে চার দফা বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণ, সরকারের কর্মকর্তারা দুর্নীতি করেন, ঘুষ খান। যে কারণে নিত্যপণ্যের দাম না বাড়িয়ে সরকারের উপায় থাকে না।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি প্রতারক দল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে তারা ঘরে ঘরে ভোট চেয়েছে। মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জয়ের পর তারা মানুষকে লাথি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই তারা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান সরকার বিএনপির নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখতে সারা দেশে অন্তত ৩৫ হাজার নেতা-কর্মীর নামে মামলা করেছে। মামলা ও পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের অনেক কর্মী আজ নিজের এলাকা ছেড়ে ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালিয়ে, ভ্যান চালিয়ে এমনকি নৈশপ্রহরীর কাজ করে জীবন চালাচ্ছেন। অবিলম্বে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া এ দেশের গণতন্ত্রের মা। তাঁর নামে মিথ্যা দুর্নীতি মামলা দিয়ে সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। তিনি দ্রুত খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার অঙ্গীকার ছিল, এ দেশে মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য থাকবে না। মানুষের কথা বলার অধিকার থাকবে। অথচ আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। দেশে আজ ৪২টি টেলিভিশন চ্যানেল, অনেক সংবাদপত্র। কিন্তু কেউ স্বাধীন না। সরকারের বিরুদ্ধে সত্য বলতে গেলেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে সরকার সাংবাদিকদের জেলে ভরে রাখছে।
বেলা ১১টায় শুরু হওয়া সমাবেশে সকাল থেকেই ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে থাকেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও সাংগঠনিক সম্পাদক ওরারেছ আলী মামুনসহ ময়মনসিংহ মহানগর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতারা।