দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, রাতের শীতে কাবু মানুষ
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দিনে রোদের তীব্রতা থাকলেও রাতের শীতে কাবু হচ্ছে মানুষ। প্রতিদিন সকাল সকাল রোদের দেখা মিললেও বিকেল হতে না হতেই শুরু হচ্ছে শীতের আমেজ। হেমন্তের মাঝামাঝি সময়ে এসে সন্ধ্যা নামলেই জেলার মানুষকে ঠান্ডায় কাবু করছে উত্তরের হিমেল বাতাস। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত হালকা কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক। এতে রাত নয়টার মধ্যেই প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড় শহরসহ জেলার অন্য বাজারগুলো।
আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, ১৮ দিন ধরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। ৭ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ১৬ দিন সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করেছে তেঁতুলিয়ায়। এর মধ্যে গতকাল ২৩ নভেম্বর নওগাঁর বদলগাছিতে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলেও ওই দিন তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
১৮ দিন ধরে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। ৭ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ১৬ দিন সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করেছে তেঁতুলিয়ায়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ প্রথম আলোকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তেঁতুলিয়া হিমালয়ের খুব কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে হিমেল বাতাস সরাসরি এখানে আসছে। সাইপ্রাস থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস হিমালয়ে ধাক্কা খেয়ে এই এলাকায় আসায় এখানে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এই হিমেল বাতাস দিনের বেলায়ও থাকছে, তবে দিনে সূর্যের তাপ থাকায় তা অনুভূত হচ্ছে না। রাত গভীর হলেই তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তেঁতুলিয়া হিমালয়ের খুব কাছাকাছি হওয়ায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে হিমেল বাতাস সরাসরি এখানে আসছে। সাইপ্রাস থেকে আসা ঠান্ডা বাতাস হিমালয়ে ধাক্কা খেয়ে এই এলাকায় আসায় এখানে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে।
রাতে শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে কুয়াশা বেশি দেখা যাচ্ছে। রাতের হিম বাতাসে কাবু হয়ে লেপ-কাঁথা জড়িয়ে ঘুমাতে হচ্ছে এই উত্তর জনপদের মানুষকে। সন্ধ্যার ঠান্ডা বাতাসে কাবু হয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই ঘরে ফিরছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে দিনে রোদ আর রাতে শীতের কারণে কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশিতে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা এ ধরনের সমস্যায় বেশি পড়ছেন বলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
পঞ্চগড় শহরের রিকশাচালক মো. শাহজাহান আলী বলেন, ‘আমরা দিনে যখন রিকশা নিয়ে বের হই, তখন পাতলা কাপড়চোপড় পরেই বের হই। তবে তিন-চার দিন ধরে সন্ধ্যা হতে না হতেই ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা জড়ো হয়ে আসছে। রাতে বেশিক্ষণ রিকশা চালানো যাচ্ছে না। ঠান্ডা বেশি লাগায় রাতে যাত্রীও পাওয়া যাচ্ছে কম।’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. সিরাজউদ্দৌলা প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে পঞ্চগড়ে দিনে রোদ আর রাতে ঠান্ডা বাতাসে কেউ কেউ ঠান্ডাজনিত সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, হঠাৎ করে নেমে আসা এমন শীতে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে একটু বেশি সতর্ক হতে হবে, যেন কোনোভাবে তাঁদের ঠান্ডা না লাগে।