টাকার অভাবে মেডিকেলে ভর্তি হতে পারছেন না মেহেদী
মেহেদী হাসান ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় ভালো। এবার নীলফামারী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তাঁর ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মেহেদী হাসানের বাড়ি বগুড়ার কাহালু উপজেলার কালাই ইউনিয়নের উতড়া গ্রামে। তাঁর বাবা আফজাল হোসেন হিমাগারের কুলি। মাঝেমধ্যে অটোভ্যানও চালান। যা রোজগার করেন, তা দিয়ে চলে সংসার আর দুই ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনার খরচ। মা মেহেরুন বেগম গৃহিণী। ভাইবোনদের মধ্যে মেহেদী হাসানই বড়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পারিবার সূত্রে জানা গেছে, মেহেদী হাসান স্থানীয় তিনদীঘি উচ্চবিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান। বাবার কুলিগিরির উপার্জন, একটি বেসরকারি ব্যাংকের বৃত্তি এবং সুদে ঋণ নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হন রংপুর কারমাইকেল কলেজে। সেখানকার শিক্ষক হুমায়ন কবিরের সহযোগিতায় তিনি মেসে থেকে পড়াশোনা করে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেহেদী নীলফামারী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ভর্তিসহ অনুষঙ্গিক খরচ বাবদ দরকার ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। কিন্তু তাঁর হতদরিদ্র বাবার পক্ষে এই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বসতভিটা ছাড়া তাঁদের আর কোনো সম্পদ নেই।
>মেহেদীর বাবা হিমাগারের কুলি
যা রোজগার করেন, তা দিয়ে চলে সংসার আর তিন ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ
গত বুধবার মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘খেয়ে না খেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে এসেছি। কখনো বাবার সঙ্গে ভ্যান চালিয়েছি। এর মধ্যেও স্বপ্ন দেখতাম একদিন চিকিৎসক হব। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তির টাকা এখনো জোগাড় করতে পারিনি। ভর্তি হতে পারবেন কি না, এ দুশ্চিন্তা এখন তাড়া করছে। এ মাসের মধ্যেই কলেজে ভর্তি ফির ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে।’
মেহেদী হাসান আরও বলেন, মেডিকেল ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।
বাবা আফজাল হোসেন বলেন, তাঁর তিন ছেলেমেয়ে। এর মধ্যে একমাত্র মেয়ে পড়ে কাহালু মহিলা ডিগ্রি কলেজে। আর ছোট ছেলে পড়ে কাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। বড় ছেলে মেহেদী হাসান অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছে। ছেলের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় গর্বে তাঁর বুক ফুলে ওঠে। কিন্তু ছেলের মেডিকেলে ভর্তির টাকা কোথায় পাবেন, তা ভেবে কিনারা পাচ্ছেন না।
মেহেদি হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭৩৫১৭৯৫৪৫ এই নম্বরে।