জেএমবির দুই ‘সামরিক প্রধান’ গ্রেপ্তার
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (পুরোনো জেএমবি) দুজন ‘সামরিক প্রধান’কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে উপজেলার চেংমারী সম্পদবাড়ি গ্রাম থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানিয়েছে জেলা পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুরোনো জেএমবির ঠাকুরগাঁও জেলার সামরিক শাখার প্রধান এমদাদুল হক (৩১) ও রানীশংকৈল উপজেলার সামরিক শাখার প্রধানের দায়িত্বে থাকা শহিদুল ইসলাম (২৫)।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশ হেডকোয়াটার্স ও বগুড়া জেলা পুলিশের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে চেংমারী সম্পদবাড়ি গ্রামে এমদাদুল হকের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশ পুরোনো জেএমবির ঠাকুরগাঁও জেলার সামরিক শাখার প্রধান এমদাদুল হক ও রানীশংকৈল উপজেলার সামরিক শাখার প্রধান শহিদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে পাঁচটি জিহাদি বই ও দুটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পরে আটক দুজনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার সকাল পৌনে সাতটার দিকে রানীশংকৈল উপজেলার পদমপুর উমরা ডাঙ্গী গ্রামের মো. সাদ্দামের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সাদ্দাম পালিয়ে যান। পরে তাঁর বাড়ি থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল ও একটি একনলা বন্দুক, তিনটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি পিস্তলের গুলি উদ্ধার করা হয়।
এসপি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা নিজেদের পুরোনো জেএমবির ইছাবা (সামরিক) বিভাগের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছেন। সামরিক কার্যক্রম ও অর্থ সংগ্রহের জন্য তাঁরা বিভিন্ন জেলায় সফর করতেন। তাঁদের সঙ্গে পুরোনো জেএমবির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও যোগাযোগ ছিল। সম্প্রতি তাঁরা রানীশংকৈলের চেংমারী গ্রামের এমদাদুল হকের বাড়ি ও বিভিন্ন জায়গায় কার্যক্রম পরিচালনা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মিটিংয়ে মিলিত হন। গত মঙ্গলবার তাঁরা সংগঠনের সামরিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আলোচনার জন্য এমদাদুল হকের বাড়িতে একত্র হয়েছিলেন। সে সময়ে পুরোনো জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক বিভাগের প্রধানসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা নিষিদ্ধঘোষিত পুরোনো জেএমবি সদস্য পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছেন বলে তাঁরা জানান।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এমদাদুল হক ও শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে রানীশংকৈল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে। তাঁদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।