জানালা দিয়ে বের করে ২০০ গজ দূরে ছুড়ে ফেলল হাতি
হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রামের বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেন। কিন্তু সাহেব আলী দম্পতি বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় একটি হাতি আশ্রাফি খাতুনের ঘরের জানালা দিয়ে শুঁড় ঢুকিয়ে তাঁকে টেনে বের করে প্রায় ২০০ গজ দূরে ছুড়ে ফেলে।
বান্দরবানের লামায় বুনো হাতির আক্রমণে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে লামার সরই এলাকার একটি গ্রামে অকস্মাৎ হাতির দল ঢুকে পড়ে। এ সময় গ্রামের বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে পালিয়ে গেলেও ওই বৃদ্ধা পালাতে পারেননি। তাঁর নাম আশ্রাফি খাতুন। তাঁর বাড়ি সরই ইউনিয়নের হিমছড়িপাড়ায়।
হিমছড়িপাড়ার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিন জানান, সোমবার রাতে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন আশ্রাফি (৭০) ও তাঁর স্বামী সাহেব আলী (৭৫)। রাত ২টার দিকে লামা সদর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরের ওই হিমছড়িপাড়ায় ১০–১১টি হাতি ঢুকে পড়ে। হাতির উপস্থিতি টের পেয়ে গ্রামটির বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেন। কিন্তু সাহেব আলী দম্পতি বাড়িতেই ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় একটি হাতি আশ্রাফি খাতুনের ঘরের জানালা দিয়ে শুঁড় ঢুকিয়ে তাঁকে টেনে বের করে প্রায় ২০০ গজ দূরে ছুড়ে ফেলে। এতে তাঁর মৃত্যু হয়। সাহেব আলী পালিয়ে বাড়ির পাশের একটি পুকুরের পানিতে নেমে আত্মরক্ষা করেন।
হাতি চলে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আশ্রাফি খাতুনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, লাশের সুরতহালের পর তা আত্মীয়স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। খাদ্যের অভাবে ক্ষুধার্ত হাতির পাল লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। হাতির পাল এ সময় চারটি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস করে। এ ছাড়া গ্রামের কলাবাগান ভেঙে গাছ খেয়ে চলে যায়।
গত বছরের ২৯ মে লামার সরই ইউনিয়নের হিমছড়িসংলগ্ন আন্ধারি এলাকায় হাতির আক্রমণে এক নারী নিহত হয়েছিলেন।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম জানান, হাতির পালটি সপ্তাহখানেক ধরে পার্শ্ববর্তী গজালিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পাড়া ও গ্রামে ঢুকে ভাঙচুর করছিল। সোমবার রাতে সরইয়ে ঢুকে পড়ে। পরে হাতির পালটি টংকবাতির বনাঞ্চলের দিকে চলে যায়। গত বছরের ২৯ মে সরইয়ে হিমছড়িসংলগ্ন আন্ধারি এলাকায় হাতির আক্রমণে এক নারী নিহত হয়েছিলেন বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।