চোরাই গাড়ি নিবন্ধনের মামলায় বিআরটিএ কর্মকর্তা কারাগারে
জাল কাগজপত্র দিয়ে চোরাই গাড়ি নিবন্ধন করে দেওয়ার মামলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বরিশাল কার্যালয়ের সাবেক পরিদর্শক আইয়ুব আনসারীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষে সোমবার দুপুরে তিনি বরিশাল বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালতের বিচারক মো. মহিসন উল হক জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায় ও আসামি আইয়ুব আনসারীর আইনজীবী মোখলেচুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আইয়ুব আনসারী বরিশাল নগরের পশ্চিম কাউনিয়া সাধুর বটতলা এলাকার বাসিন্দা। আনসারী বর্তমানে ঢাকা বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের (ইঞ্জিনিয়ার) অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ মাদারীপুর জেলার মশিউর রহমান ঠাকুরের একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চ-১৩-৩৫০) মানিকগঞ্জের শিবালয় থানা এলাকা থেকে চুরি হয়। এ ঘটনায় গাড়ির চালক শাহজাদা শিকদার ওইদিনই শিবালয় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরবর্তী সময়ে গাড়ির মালিক মশিউর রহমান জানতে পারেন, একই চেসিস নম্বরে একটি মাইক্রোবাস বরিশাল বিআরটিএ অফিসের মাধ্যমে নতুন রেজিস্ট্রেশন (বরিশাল ছ-১১-০০৩৯ নম্বর) ব্যবহার করে রাস্তায় চলাচল করছে। এ ঘটনা মশিউর বরিশাল এবং ঢাকা বিআরটিএ অফিসে অবহিত করেন। বরিশাল বিআরটিএ অফিস কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই করে ওই রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করে।
এর আগে রূপ কুমার বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি বরিশাল নগরের নতুন বাজার এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে ওই চোরাই মাইক্রোবাসটির মালিক হিসেবে নিবন্ধনের জন্য বরিশাল বিআরটিএ অফিসে আবেদন করেন। কার্যালয়ের তৎকালীন মোটরযান পরিদর্শক আইয়ুব আনসারী গ্রাহক রূপ কুমার বিশ্বাসের দাখিল করা কাগজপত্র সঠিক ও ত্রুটিমুক্ত উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেন। তাঁর সুপারিশের ভিত্তিতে বরিশাল বিআরটিএ কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক নূরুজ্জামান চোরাই গাড়ির নিবন্ধন দেন।
এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই বরিশাল বিআরটিএর তৎকালীন সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ার) এমডি শাহ আলম কোতোয়ালি মডেল থানায় রেজিস্ট্রেশন গ্রহণকারী রূপ কুমার বিশ্বাসকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। একই ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনায়েত হোসেন ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মোটরযান পরিদর্শক আইয়ুব আনসারী ও রূপ কুমার বিশ্বাসকে অভিযুক্ত করে পৃথক একটি মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আইয়ুব আনসারীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ওই মামলা থেকে রূপ কুমার বিশ্বাসকে অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।