গ্রেপ্তার আতঙ্কে সবাই পালালেন, বিছানায় মরে থাকলেন মা
চাচাতো ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পরিবারের কয়েকজন সদস্য গ্রেপ্তার হন। অসুস্থ মা জোবেদা খাতুনকে (৮৫) ঘরে একা রেখে গ্রেপ্তার আতঙ্কে পালান পরিবারের অন্য সদস্যরা। গতকাল সোমবার পুলিশ বাড়ি থেকে ওই বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মীরশংকর গ্রামে। এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মীরশংকর গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুল মনাফের (৩২) পরিবারের সঙ্গে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চাচাতো ভাই শাহিনুর রহমানের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ১২ ডিসেম্বর রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফেরার পথে মনাফ নিখোঁজ হন। এর তিন দিন পর ১৫ ডিসেম্বর পুলিশ শাহিনুরদের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ির পেছনের একটি গর্ত খুঁড়ে মনাফের লাশ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে নিহত মনাফের বড় ভাই বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে কুলাউড়া থানায় হত্যা মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ শাহিনুর (৪০) ও তাঁর ভাই আতিকুর রহমানসহ (৫০) এজাহারভুক্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, মনাফের লাশ উদ্ধারের পর গ্রেপ্তার আতঙ্কে শাহিনুরদের পরিবারের সদস্যরা জোবেদা খাতুনকে ঘরে একা রেখে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। গতকাল বিকেলে জোবেদার মেয়ে আফসা বেগম মাকে দেখতে এসে বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপর পুলিশ গিয়ে ঘরের বিছানায় জোবেদার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে।
বিকেলেই তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভূষন রায় আজ মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জোবেদাকে অসুস্থ অবস্থায় এভাবে ঘরে একা ফেলে সবার পালানো ঠিক হয়নি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি মারা যেতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।