গোয়ালন্দ মোড়ে ট্রাকের দীর্ঘ সারি, দুর্ভোগ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ মোড়ে পারাপারের অপেক্ষায় থাকা ট্রাকের দীর্ঘ সারি দেখা দিয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে ১২ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় থেকে আলীপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর পর্যন্ত সড়কের বাঁ পাশ দিয়ে ট্রাক দাঁড় করানো। প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই সারি। চালকেরা অলস সময় পার করছেন। কেউ কেউ আশপাশের পুকুর খুঁজে গোসল করতে যাচ্ছেন। তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছেন অনেক ট্রাকচালক। ফলে দুর্বিষহ সময় পার করতে হচ্ছে তাঁদের।
মাগুরার ট্রাকচালক আবদুর রব বলেন, যশোরের বেনাপোল থেকে শুক্রবার বিকেল ৪টায় গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় আসেন তিনি। লোহার কুচি নিয়ে কাঁচপুর যাবেন তিনি। কাঁচামালের গাড়ির বেশি চাপ ছিল। যে কারণে অন্য অনেক ট্রাক পার হতে পারলেও তিনি যেতে পারেননি। আজও যেতে পারবেন কি না, সন্দেহ। অনেক খরচ হচ্ছে। ফেরির সংখ্যা আরও বেশি হলে ভালো হতো।
বরিশাল থেকে ধানবোঝাই ট্রাক নিয়ে শুক্রবার এসেছেন মানিকগঞ্জের গোলরার বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন। তিনি যাবেন ধামরাই। গোয়ালন্দ মোড় থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে আছেন তিনি। সেখানে খাওয়াদাওয়া ও পায়খানার তেমন ব্যবস্থা নেই। ফলে কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়েছেন বলে জানান তিনি।
শনিবার দুপুর ১২টায় আসেন মোশাররফ হোসেন। শীতকালে প্রায়ই এ রকম অপেক্ষায় দুর্ভোগে পড়তে হয় বলে জানান তিনি। বলেন, ‘এখানে খাওয়া, গোসল ও পায়খানার কোনো ব্যবস্থা নেই। এই রাস্তা রাতে একেবারে ফাঁকা থাকে। আমাদের কাছে অনেক সময় পথ খরচ বা আনুষঙ্গিক কাজে মালিকের অনেক টাকা থাকে। রাস্তার ফাঁকা স্থানে রাতে থাকায় আতঙ্কে থাকতে হয়। কোনো কারণে টাকা ছিনতাই হলে আমরা মালিকের কী জবাব দেব?’
কয়েকজন ট্রাকচালক ও তাঁদের সহকারী জানান, মাঝেমধ্যে দালালেরা আসে। আগে পার করে দেওয়ার জন্য টাকা চায়। পুলিশের সহায়তায় মাঝেমধ্যে কাজও হয়। আবার বেশির ভাগ সময় টাকা মার যায়। তাঁদের কাছেও দালালেরা এসেছিল।
রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পারাপারের অপেক্ষায় থাকায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ। বলেন, ঘাটে প্রায় চার শতাধিক যানবাহন পারের অপেক্ষায় আছে। তবে গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় অপেক্ষমাণ যানবাহনের কথা তিনি জানেন না।
রাজবাড়ীর ট্রাফিক পরিদর্শক মো.মাসুদ মিয়া বলেন, ‘কিছু দুষ্ট লোক আছে। যারা চালক সেজে এসব অপকর্ম করে। আমরাও তাদের খুঁজছি। তবে টাকা নিয়ে সিরিয়ালে আগে দেওয়ার কথা পুলিশ কখনো বলে না। কেউ কখনো আমাদের কাছে কোনো অভিযোগও করে নাই।’