বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, দেশে আইনের শাসনের পূর্বশর্ত হচ্ছে গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হলে স্বাধীন বিচারব্যবস্থার প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা না থাকলে স্বাধীন বিচারকাজ করা সম্ভব নয়। রোববার দুপুরে নেত্রকোনা পৌরসভা আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের বিচার বিভাগ এখন সম্পূর্ণ আলাদা উল্লেখ করে ওবায়দুল হাসান বলেন, আপিল বিভাগের বিচার আর হাইকোর্টের বিচার এক নয়। আপিল বিভাগের বিচারকের দায়িত্ব অনেক বেশি ও ব্যাপক। আপিল বিভাগে বিচারের পর আর বিচার নেই। তাই এই বিভাগে বিচারকাজ অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা বিচারে আলাদা কিছু করতে পারি না। বিচারের মধ্য দিয়ে মানুষের কল্যাণ করা যায়। আমরা তা করতে পারি। রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।’
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘গুণীজনদের সংবর্ধনার রূপ ভিন্ন রকম। গুণীজন আর পদ আলাদা। আমি একটা পদে আছি, গুণীজন কিন্তু নই। গুণীজন যেকোনো সময় একটা কিছু সৃষ্টি করতে পারেন, পদ পারে না। আমাদের এখন এমন কাজ করা উচিত, যাতে প্রকৃত গুণীদের সম্মান করতে পারি। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাঁদের কাজকর্ম জানতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘নেত্রকোনা জেলা একটি অসাম্প্রদায়িক জেলার হিসেবে পরিচিত। এখানকার মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনার। সেই চেতনাকে সব সময় ধারণ করতে হবে। আপনারা এমন কিছু আবদার করবেন না, যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়।’
পৌরসভা কার্যালয়ের আব্বাছ আলী খান স্মৃতি মিলনায়তনে আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম খান। বক্তৃতা করেন সাবেক সচিব ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কমিশনের (পিএসসি) সদস্য উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী, আটপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খায়রুল ইসলাম, জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আমীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুর রহমান, জেলা প্রেসক্লাব সম্পাদক শ্যামলেন্দু পাল, পূজা উদ্যাপন পরিষদের উপদেষ্টা নির্মল দাস প্রমুখ।