খুলনায় শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ঠিকাদারের করা চাঁদাবাজির মামলার ঘটনায় পুলিশ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার তাঁদের বাগেরহাট, যশোর এবং খুলনার বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন যশোরের কেশবপুরের হদ গ্রামের মোহাম্মদ আবু সাঈদ(২২), বাগেরহাটের রামপালের বারুইপাড়া গ্রামের মো. ইসমাইল মল্লিক (২৭), খুলনার কয়রার গোগড়া গ্রামের মো. মেহেদী হাসান (২১) এবং খুলনা নগরে দৌলতপুর পাবলা এলাকার মো. সাইফুল ইসলাম (২৩)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি আরও তদন্ত করব।'
ঠিকাদার ইউসুফ আলীর করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ঠিকাদারি একটি কাজ নিয়ে ওই চারজন তাঁর বাড়িতে এসে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তখন তিনি তাঁদের চাঁদার টাকা দেবেন বলে ঘরের ভেতর গিয়ে পিস্তল আনেন। পিস্তল দেখে ওই চারজন দৌড় দেন। তখন ঠিকাদার দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। সেই গুলির একটি লামিয়া নামের এক শিশুর পায়ে বিদ্ধ হয়।
তবে ঠিকাদার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে মামলায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া চার তরুণের স্বজনেরা। সাইফুলের মামা মো. সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদার ইউসুফ আলীর মেয়ের সঙ্গে কেশবপুরের বাসিন্দা সাঈদের সম্পর্ক ছিল। সাঈদ মেয়েটির ফোন কয়েক দিন ধরে বন্ধ পান। তিনি জানতে পারেন, মেয়েটিকে অন্য কোথাও বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন ঠিকাদার। এ অবস্থায় সাঈদ তিন বন্ধু সাইফুল, ইসমাইল ও মেহেদীকে নিয়ে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই ঠিকাদার ইউসুফ আলীর বাড়িতে যান। তাঁকে সম্পর্কের বিষয়টি খুলে বলেন তাঁরা। এমন সময় ইউসুফ আলী উত্তেজিত হয়ে প্রথমে গালিগালাজ করেন। পরে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় যান পিস্তল আনতে। তখন সেখানে উপস্থিত অন্যরা ওই তরুণদের বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তারা বের হয়ে দরজা পর্যন্ত পৌঁছান। তখন ইউসুফ আলী পিস্তল নিয়ে ঘর হন এবং তিনটা গুলি ছোড়েন।
ঠিকাদার ইউসুফ আলীর মুঠোফোন নম্বরে রোববার রাতে একাধিকবার ফোন দেন এই প্রতিবেদক। তবে নম্বরটি বন্ধ থাকায় অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে গুলিবিদ্ধ লামিয়া এখনো লামিয়া খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মেয়েটি হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১১-১২ নম্বর ওয়ার্ডের ২২ নম্বর শয্যায় ভর্তি আছে। রোববার পর্যন্ত তারা পায়ের অস্ত্রোপচার হয়নি।