২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

কাদের মির্জাকে নিয়ে নিক্সন: পাগলারে পাবনায় আটকান, নাইলে এমন গণধোলাই খাবেন...

নিক্সন চৌধুরী ও আবদুল কাদের মির্জা

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে ‘পাগল’ আখ্যায়িত করে পাবনায় আটকে রাখার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন। তিনি বলেছেন, ‘পাগলারে পাবনায় আটকান। নইলে এমন গণধোলাই খাবেন, পালানোর পথ পাবেন না। পাগলদের স্থান রাস্তায় না। আমি সরকারকে অনুরোধ করি, পাগলকে পাবনা পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।’

ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভার চৌধুরীকান্দা সরদরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গতকাল রোববার বিকেলে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নিক্সন চৌধুরী এই মন্তব্য করেন। ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন থেকে নির্বাচিত এই সাংসদ যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় ভাঙ্গা পৌরসভার ‘সাত নম্বর ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণ’-এর উদ্যোগে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

কাদের মির্জার উদ্দেশে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘পাগলারেও আমি চিনি না, জীবনে দেহি নাই, জীবনে যাই নাই নোয়াখালী। আরে মিয়া নেতা হইতে চান? পরিচিতি চান? পাগলামি কইরা নেতা হওয়া যায় না। আপনাকে প্রমাণ করতে হবে পাগলা আমি আপনারে কিছু কইছি কিনা? সরকারের উচিত এই সব পাগল যথাশীঘ্রই পাবনায় পাঠানো। না হলে গণধোলাই এমন খাবে যে চেহারা চেনা যাবে না।’

১৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনী সভায় কাদের মির্জা সাংসদ নিক্সনকে জড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

আবদুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই। ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন। এর আগে ১৩ জানুয়ারি এক নির্বাচনী সভায় কাদের মির্জা সাংসদ নিক্সনকে জড়িয়ে একটি বক্তব্য দেন, যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

ওই বক্তব্যে মির্জা কাদের অভিযোগ করেন, সাংসদ নিক্সন তাঁকে চুনোপুঁটি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এর জবাবে মির্জা কাদের বলেন, ‘নিক্সন চৌধুরী সাহেব আপনি বলেছেন চুনোপুঁটিদের কথা কে শোনে। নিক্সনকে জিগাই আপনার বয়স কত। আমার রাজনৈতিক বয়স আপনার বয়সের চেয়ে বেশি। আপনি ত্যাগী নেতা কাজী জাফরউল্ল্যাহকে হারাইয়া নির্বাচিত হয়েছেন ভোট চুরি করে।’

গতকালের সংবর্ধনা সভায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরী উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘আর একটা কথা কইতে মন চাইতেছে। না কইয়া পারি না। আগে দুই-একটা ভাঙ্গার পাগল আমারে নিয়া কথা কইত। আমি এত বড় নেতাই হইছি এখন ভিনদেশি পাগল আমার উপর খ্যাপছে। তারে আমি কিছু কইছি? তারে আমি চিনি? জীবনে নাম শুনছি? সে কয় আমি ভোট ডাকাতি কইরা এমপি হইছি। পাগলা স্বপ্নে না দেখলে এমন কথা কইতে পারে না।’ গত সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাঁর এলাকায় হয়েছে, মন্তব্য করে নিক্সন বলেন, ‘আমি কি ভোট ডাকাতি করেছি। বাংলাদেশে নির্বাচন হইলে একটাই নির্বাচন হয়েছে ভাঙ্গাসহ এই তিন উপজেলায়।’

বড় পাগল ঠিক করতে অনেকবার ওষুধ দিছে এ এলাকার জনগণ। আর আপনার মতো ছোট পাগল ঠিক করতে আমার চরভদ্রাসন উপজেলার লোকই যথেষ্ট।
নিক্সন চৌধুরী, সাংসদ, ফরিদপুর–৪

নিক্সন চৌধুরী ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সাংসদ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্ল্যাহর প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘ওই রকম একটি প্লেয়ার ভাঙ্গাতেও ছিল। তার রাজনীতির বয়স আমার থেকে বেশি। এখন তাকে খুঁইজা পাওয়া যাচ্ছে না। আর আপনারেও খুঁইজা পাওয়া যাবে না। আমি কোনো দিন তাঁরে চিনতাম না। একদিন মোবাইল খুইলা দেখি পাগলা আমারে গালি দিচ্ছে। পাগলা মনে হয় আমার চাচার (কাজী জাফরউল্ল্যাহ) কাছ থেকে মাল খাইছে।’

সাংসদ বলেন, ‘আমারে চ্যালেঞ্জ জানাবেন না, পাগল হন আর ছাগল হন। আমরা খেলতে জানি, আমরা ভাইসা আসি নাই। পাগলামি অন্য জায়গায় গিয়া করেন। বড় পাগল ঠিক করতে অনেকবার ওষুধ দিছে এ এলাকার জনগণ। আর আপনার মতো ছোট পাগল ঠিক করতে আমার চরভদ্রাসন উপজেলার লোকই যথেষ্ট।’

ভাঙ্গা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. বাকী মাতুব্বরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও ভাঙ্গা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুর রহমান, ভাঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মুন্সী প্রমুখ।