দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলার ঘটনা তদন্তে তাঁর সঙ্গে ছোটখাটো বিরোধ বা মতভিন্নতাগুলোও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ জন্য এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্থানীয় সরকারদলীয় রাজনীতিতে যুক্ত। উপজেলা প্রশাসনের অন্তত চারজন সরকারি কর্মচারীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার পালশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হাকিমপুর উপজেলার বাওনা উচ্চবিদ্যালয়ের কৃষি বিষয়ের শিক্ষক ময়নুল ইসলামকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছেন তাঁর স্ত্রী বিউটি বেগম। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়নুল বাসায় ফেরেননি।
জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বুধবার দুপুরে প্রথম আলোকে জানান, ইউএনওর ওপর হামলার ঘটনায় এ নিয়ে ১৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ আদালত থেকে রিমান্ডে পেয়েছে তিনজনকে।
স্থানীয় লোকজন জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক ময়নুল ইসলাম ঘোড়াঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাফে খন্দকার ওরফে শাহেনশাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। উপজেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, উপজেলার ডুগডুগী হাটে হাতেম আলী নামের একজনের মার্কেটের সামনের ড্রেন বন্ধ করে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করেন ময়নুল ও তাঁর সহযোগীরা। গত ৩১ আগস্ট ইউএনও ওয়াহিদা খানমের কাছে অভিযোগ করেন হাতেম আলী। বৃহস্পতিবার সরেজমিন পরিদর্শন শেষে বিষয়টির সুরাহা করতে চেয়েছিলেন ইউএনও ওয়াহিদা। বুধবার রাতেই তিনি হামলার শিকার হন।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, ময়নুলের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে।
ওয়াহিদাকে দেখতে আইজিপি
ইউএনও ওয়াহিদা খানম এখন ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালের হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে চিকিৎসাধীন। তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক মো. জাহেদ হোসেন গতকাল বলেন, ওয়াহিদার পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে, পরিবারের সদস্য এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন। তবে তাঁর শরীরের ডান দিকটা অবশ হয়ে আছে। এ জন্য ফিজিওথেরাপি চলছে।
গতকাল পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ হাসপাতালে ইউএনও ওয়াহিদাকে দেখতে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আইজিপি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওয়াহিদার ওপর হামলার মামলাটির তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।’