এক পায়ে রিকশা চালানো রোজিনা পেলেন ব্যাটারিচালিত রিকশা
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে এক পায়ে রিকশা চালিয়ে সংসার চালানো রোজিনা বেগমকে (৩২) ব্যাটারিচালিত রিকশা দিয়েছেন সাংসদ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাংসদের পক্ষে ওই নারী রিকশাচালককে রিকশাটি হস্তান্তর করা হয়। এটি হস্তান্তর করেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান খান মো. আবুবকর সিদ্দিকী।
এর আগে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে রোজিনাকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও পাঁচ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, রোজিনা মির্জাগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা নন। তবে তিনি মির্জাগঞ্জে স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাই তাঁর নিরাপদ বাসস্থানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের মাধ্যমে জমিসহ একটি ঘর প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
রোজিনা বেগমের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলার খেজুরতলা গ্রামে। সাত বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে তাঁর একটি পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। অভাবের সংসারে খুব ছোট বয়সেই অটোরিকশাচালক সুমন খানের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। স্বামীর সঙ্গে তিনি ঢাকায় থাকতেন। ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ছয় বছর আগে স্বামী সুমন খান মারা যান। সাত বছরের মেয়ে রিতু ও চার বছরের ছেলে হৃদয়কে নিয়ে তখন তিনি কঠিন বিপদে পড়েন। বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে ঢাকায় তিনি এক পায়ে রিকশা চালাতে শুরু করেন। অল্প আয়ে ঢাকা শহরে বেশি দিন টিকতে না পেরে তাঁর ছোট ভাই আফানের মাধ্যমে মির্জাগঞ্জে বসবাস শুরু করেন। জীবিকা নির্বাহের জন্য ২০০ টাকা ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে শুরু করেন রোজিনা। তাঁর জীবনসংগ্রামের কথা প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসনসহ অনেকেই তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসছেন।