ফুলকির সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব শুরু, যা থাকছে তিন দিনের আয়োজনে

সাংস্কৃতিক উৎসবে ফুলকির শিশুদের ব্রতচারী নৃত্য। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চেছবি: সৌরভ দাশ

‘মোরা ঝরনার মতো চঞ্চল, মোরা প্রকৃতির মতো সচ্ছল’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে শিশু কিশোরদের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক জগৎ ফুলকির সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমিতে উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে এভারেস্ট আরোহণকারী বাবর আলী বলেছেন, ‘আমরা সবাই সংহারে মেতেছি। সংরক্ষণ করছি না। এখন চারপাশ নিয়ে কৌতূহলী হতে দেখি না লোকজনকে। যদি শিশুরা অন্তত তাঁদের নিজস্ব উপজেলা বা জেলাটা পায়ে হেঁটে ঘুরে দেখে তাহলে সেখান থেকে মুগ্ধ হওয়ার অনেক কিছু পাবে।’

তিন দিনব্যাপী এই উৎসব শুরু হয় শিশু কিশোরদের ব্রতচারী নৃত্যের মাধ্যমে। পরে উদ্বোধনী পর্বে কথামালায় অংশ নেন ফুলকির সভাপতি সাংবাদিক আবুল মোমেন, সর্বাধ্যক্ষা শীলা মোমেন ও সম্পাদক কবি ওমর কায়সার।

ফুলকির শিশুদের সমবেত সংগীত পরিবেশনা। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে
ছবি: সৌরভ দাশ

উদ্বোধক বাবর আলী বলেন, ‘কিশোর বয়সে চাঁদের পাহাড় বই পড়ে আমি পর্বত আরোহণের স্বপ্ন দেখি। ফুলকির কিশোররা সবাই যার যার স্বপ্ন চূড়ায় একদিন আরোহণ করবে।’

আবুল মোমেন বলেন, ‘নানা কাজের মধ্য দিয়ে আমরা শিশুদের মনোজগৎকে সমৃদ্ধ করার কিংবা সৃজনশীল কাজে তাদের আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই শিশুদের পৃথিবীটা বাঁচিয়ে রাখার কাজ করে যেতে হবে। প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে সবাইকে। যদি প্রকৃতির ওপর অত্যাচার না করি তাহলে পৃথিবীটা বাসযোগ্য করা যাবে।’

আবুল মোমেন আরও বলেন, ‘শিশুদের ক্ষমতা অসীম। তাদের কৌতূহল বেশি। আনন্দিত হওয়ার, বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা বেশি। তাদের কেবল সুযোগ করে দিতে হবে। মুখস্থ বিদ্যার কারণে তাদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব বাধা ডিঙিয়ে ফুলকি চেষ্টা করে যাচ্ছে মানবিক এবং প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ তৈরির।’

উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করা হয় বিশ্বখ্যাত শিল্পীদের চিত্রকর্মের কপি নিয়ে প্রদর্শনী। আজ বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চে
ছবি: সৌরভ দাশ

উৎসবে ফুলকির শিক্ষার্থীরা সমবেত গান, নৃত্য, কারাতে প্রদর্শন করে। আর্ট গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ববিখ্যাত চিত্রকলা, শিশুদের আঁকা ছবি ও বাবার আলীর এভারেস্ট আরোহণের ছবি নিয়ে প্রদর্শনী। উৎসবের শেষ দুই দিন সকালে থাকছে শিশু–কিশোরদের জন্য মাটির কাজ, পাপেট তৈরি, ছাপচিত্র ও তাঁত বুননের কর্মশালা। শেষদিন শনিবার সন্ধ্যায় ছোটদের জন্য গান পরিবেশন করবে সংগীত সংগঠন ‘রক্তকরবী’। উৎসবের সমাপ্তি হবে ঢোলক বাদক শিবু দাস ও তার দলের ঢোল বাদনের মধ্য দিয়ে।