কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটারে যানজট
সারা দেশে ধর্ষণ, খুন, নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মহাসড়কের কুমিল্লা সদর দক্ষিণের কোটবাড়ি নন্দনপুর এলাকা বেলা ১১টা ২৫ মিনিট থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ নামের ওই কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।
এ কর্মসূচির কারণে মহাসড়কটির উভয়মুখী লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ, কুমিল্লা মর্ডান হাইস্কুলসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন।
আজ বেলা একটার দিকে কুমিল্লার ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। মাত্রই তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে গেছেন। এখন যান চলাচল স্বাভাবিক। তবে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা ধীরগতি আছে।’
আজ বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কের কোটবাড়ি নন্দনপুর এলাকায় জড়ো হতে থাকেন। এরপর বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ শুরু করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের অনেকে ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তাঁরা স্লোগান দেয় ‘ধর্ষকের সাজা একটাই, মৃত্যু ছাড়া কথা নাই’, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ চাই না, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’ ‘রশি লাগলে রশি নে, ধর্ষককে ফাঁসি দে’ ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান। এ সময় মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদ এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার দাবি করা হয়।
ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশটাই অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ চাই। এমন বাংলাদেশের জন্য আমাদের ভাই-বোনেরা রক্ত দেয়নি। আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছি।’
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বলে জানান কুমিল্লা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বাসে বসে ছিলাম একই স্থানে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে এ কেমন আন্দোলন। আমরাও দেশে আর কোনো ধর্ষণ, খুন দেখতে চাই না। তবে কিছু হলেই মহাসড়ক অবরোধ করাও ঠিক না।’
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাসের চালক ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘একই জায়গায় দেড় ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। রোজার দিনে যাত্রীরা কষ্ট পাচ্ছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন।’